প্রথমবারের মতো চন্দ্রাভিযানে নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ নভোচারী
চাঁদে মানুষের প্রথম পা রাখার প্রায় ৫০ বছর পর সেখানে যারা যাচ্ছেন, তাদের নাম প্রকাশ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
পৃথিবী সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী ও এর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদে আগামী বছর নভেম্বরে ঐতিহাসিক 'আর্টেমিস টু' চন্দ্রযান পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে গবেষণা সংস্থাটি।
গতকাল সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, দীর্ঘ ৫০ বছর পর চন্দ্রাভিযানের জন্য নাসার নভোচারী রেইড ওয়াইজম্যান, ভিক্টর গ্লোভার ও ক্রিস্টিনা কচ এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির জেরেমি হানসেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
১৯৬৯ সালে প্রথম চন্দ্রাভিযানে যোগ দেওয়া নীল আর্মস্ট্রং, মাইকেল কলিন্স ও এডউইন অলড্রিনের পর এই ৪ জন চাঁদে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, চন্দ্রাভিযানে এবারই প্রথম ১ নারী ও ১ কৃষ্ণাঙ্গ নভোচারী যোগ দিচ্ছেন।
এতে আরও বলা হয়, গতকাল টেক্সাসের হিউস্টনে নাসা জানায়—'আর্টেমিস টু' চন্দ্রযানটি ১০ দিনের অভিযানে থাকবে। সেখানে যোগ দিতে যাওয়া ৪ নভোচারীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিচে তুলে ধরা হলো:
রেইড ওয়াইজম্যান: ৪৭ বছর বয়সী ডেকোরেটেড নেভাল অ্যাভিয়েটর ও টেস্ট পাইলট রেইড ওয়াইজম্যানকে নাসা ২০০৯ সালে নভোচারী হিসেবে নির্বাচন করে।
বাল্টিমোরের বাসিন্দা ওয়াইজম্যান ১৬৫ দিনের সফরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন।
২০২২ সালের নভেম্বরে পদত্যাগের আগে তিনি নভোচারীর কার্যালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
ওয়াইজম্যান 'আর্টেমিস টু' অভিযানের কমান্ডার হিসেবে কাজ করবেন।
ভিক্টর গ্লোভার: ৪৬ বছর বয়সী নেভাল অ্যাভিয়েটর ভিক্টর গ্লোভার স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন মহাকাশযানের পাইলট ছিলেন। প্রায় ৬ মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থেকে ২০২১ সালে তিনি পৃথিবীতে আসেন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, গতকাল হিউস্টনে অবস্থিত নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে গ্লোভার বলেন, 'মানবজাতির ইতিহাসে এ দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ পথ ধরেই একদিন মানুষ মঙ্গল গ্রহে যাবে।'
ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণকারী গ্লোভার ২০০০'র দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি বিভাগে কাজ করেছেন। তিনি মার্কিন বিমান বাহিনীতে টেস্ট পাইলটের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
২০১৩ সালে গ্লোভার নভোচারী হিসেবে নাসায় যোগ দেন। তিনি স্পেসএক্স ক্রু ওয়ান মিশনে প্রথম মহাকাশ অভিযানে গিয়েছিলেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে তিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পরিভ্রমণশীল গবেষণাগারে ৬ মাস অবস্থান করেছিলেন।
ক্রিস্টিনা কচ: একজন নারী হিসেবে দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকার রেকর্ড আছে ক্রিস্টিনা কচের। ৪৪ বছর বয়সী এই ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার ৩২৮ দিন মহাকাশে ছিলেন। তিনি নাসার বেশ কয়েকটি মহাকাশ অভিযানের জন্য বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি উন্নয়নে সহায়তা করেছেন।
মিশিগানের এই বাসিন্দা চন্দ্রাভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে ১ বছর দক্ষিণ মেরুতে ছিলেন।
জেরেমি হানসেন: ৪৭ বছর বয়সী জেরেমি হানসেন ২০০৯ সালে কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সিতে নভোচারী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। যুদ্ধবিমানের পাইলট হানসেন কানাডার ৪ সক্রিয় নভোচারীর একজন। প্রথম কানাডীয় হিসেবে তিনি সম্প্রতি নাসার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
একজন কানাডীয় হিসেবে তিনি প্রথম মহাকাশে দূরের অভিযানে যোগ দিচ্ছেন।
Comments