উপহারের জন্য ৫ মজার গ্যাজেট, দাম ২ হাজারের মধ্যে

২ হাজার টাকার মধ্যেই এমন দারুণ কিছু গ্যাজেট আছে, বিভিন্ন উপলক্ষ বা কোনো উপলক্ষ ছাড়াই কাছের মানুষদের যেগুলো উপহার হিসেবে দিতে পারেন।
উপহারের জন্য ৫ মজার গ্যাজেট, দাম ২ হাজারের মধ্যে
ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম উপায় হচ্ছে উপহার। বাজেট সীমিত হলেও সমস্যা নেই, কেন না উপহারের মূল্য নয়– উপহার দেওয়ার সময়ে যিনি দিচ্ছেন, তার ভাবনা আর অনুভূতিই মূলকথা। 

২ হাজার টাকার মধ্যেই এমন দারুণ কিছু গ্যাজেট আছে, বিভিন্ন উপলক্ষ বা কোনো উপলক্ষ ছাড়াই কাছের মানুষদের যেগুলো উপহার হিসেবে দিতে পারেন।

এলইডি চাবির রিং
মূল্য: ৫০০-৭০০ টাকা

চাবির রিং বোধহয় এমন একটি জিনিস, যা ছাড়া কেউই ঘরের বাইরে যায় না। বিশেষত যাদের প্রতিদিন ঘর তালা মেরে বাইরে যেতে হয়, তাদের জন্য তো আরও বেশি। কখনো দিনশেষে বাড়ি ফিরে যদি বিদ্যুৎ না থাকে, তালা খুলতে অন্ধকারে হাতড়াতে হয়, যা বেশ বিরক্তিকর। অন্ধকারে চাবির রিং হারিয়ে যাওয়াও পরিচিত একটি সমস্যা। হয়তো সবচেয়ে বেশি হারানো জিনিসের মধ্যে চাবির রিং অন্যতম। 

এসব সমস্যার অনেকটাই সমাধান করে দিতে পারবে এই এলইডি চাবির রিংটি। এটি অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি, তাই ছোট আকার হলেও বেশ টেকসই। এ ছাড়া এতে আছে উজ্জ্বল এলইডি বাতি, প্রয়োজন অনুযায়ী যার ঔজ্জ্বল্য কমানো-বাড়ানো যাবে। সেই সঙ্গে আলাদা আংটা থাকার কারণে কাঁধের ব্যাগে কিংবা কোমরের বেল্টে ঝুলিয়ে রাখা যাবে, এতে হারানোর ভয়ও কমবে।

বাচ্চাদের জন্য মিনি ক্যামেরা
মূল্য: ১২০০-১৫০০

বাচ্চাদের জন্য উপহার কেনাটা প্রায় সময়ই বেশ মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। কোনো কোনো বাবা-মায়ের খেলনা পছন্দ না, আবার কাপড়-চোপড় কিনতে গেলে ঠিকঠাক মাপ বোঝাটাও দায়। তাই এমন কোনো উপহার বেছে নেওয়া দরকার, যাতে শিশুমনে সৃজনশীলতার জন্ম দেবে আর তারা মজাও পাবে।

সে ক্ষেত্রে ছবি ও ভিডিও, দুটোর জন্য একটি মিনি ক্যামেরা ভালো পছন্দ হতে পারে। এতে ৩২ গিগাবাইট মেমোরি কার্ড সাপোর্ট থাকে এবং ৭২০ পিক্সেল ছবি তোলা যায়। ছোট আকারের হওয়ায় বাচ্চাদের জন্য ব্যবহার করতেও সুবিধা হয়। ছবি ট্রান্সফারের জন্য এসব ক্যামেরার থাকে ইউএসবি ২.০ পিসি ইন্টারফেস। ২ ইঞ্চি লিকুইড ক্রিস্টাল স্ক্রিন, ৪০০ এমএএইচ ব্যাটারি এবং ২ ঘণ্টা চার্জিং– একটি সাধারণ মিনি ক্যামেরা মডেলে এসব সুবিধা পাওয়া যায়। যে কারো জন্যই এই উপহার হিসেবে এই ক্যামেরাটি ভালো সময় কাটানোর সঙ্গে সৃজনশীল কিছু করার সুযোগ।

মিনি প্রিন্টার
মূল্য: ১৭০০ টাকার কাছাকাছি

ক্যামেরা ছাড়াও একটি মিনি প্রিন্টার বাচ্চাদের জন্য মজাদার জিনিস হতে পারে। এতে সহজে ব্যবহারযোগ্য ব্লুটুথ সাপোর্ট আছে। সাধারণ মিনি প্রিন্টারে থার্মাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যার বিভিন্ন ধরনের প্রিন্ট পাওয়া যায়। কোনো ধরনের কালি বা কার্টিজ কাগজ ছাড়াই বেশ ভালো মানের এবং পরিচ্ছন্ন গ্রাফিকসের ছবি পাওয়া যায়। মিনি প্রিন্টারের অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ২০০ ডিপিআই প্রিন্টিং, ছাপার গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯০ মিলিমিটার, ১০০০ এমএএইচ ব্যাটারি, ইউএসবি এবং অ্যান্ড্রয়েড ইন্টারফেস সাপোর্ট। এসব প্রিন্টারে সাধারণত ৫৭x৩০ মিলিমিটার পৃষ্ঠা ব্যবহার করা হয়। যা কি না আলাদা করে কিনতে হবে। তবে একথা মাথায় রাখা ভালো, এসব প্রিন্টারে শুধু সাদাকালো প্রিন্টই হয়। রঙিন কাগজ না হলেও এই প্রিন্টগুলো বাচ্চাদের আর্ট প্রজেক্ট, স্টিকার তৈরি, টিকিট বা রিসিট প্রিন্ট করার কাজে ইত্যাদি বিভিন্নভাবেই ব্যবহার করা যাবে।

মাইক্রোওয়েভ-ইরেজেবল নোটবুক
মূল্য: ১৬০০ টাকার কাছাকাছি

বাজেট বেশি হলে স্মার্ট ট্যাবলেট বেশি ভালো উপহার, কিন্তু বাজেট কম হলে ইরেজেবল নোটবুকের রূপে ডিজিটাল ট্যাবলেটও দেওয়া যায়। প্রস্থে ১৭ সেন্টিমিটার এবং দৈর্ঘ্যে ২৫ সেন্টিমিটার এসব নোটবুক বেশ মজার মজার কাজে ব্যবহার করা যায়। যেকোনো কিছু লিখে মুছে ফেলার ব্যাপারটা এক সময়ের স্লেট-চক মনে করিয়ে দেয়। হেয়ার ড্রায়ার, ন্যাকড়া কাপড় বা ভেজা টিস্যু দিয়ে লেখা মোছা যাবে। লেখার জন্য এই নোটবুকটিতে বিশেষ ধরনের টাচপেন ব্যবহার করা হয়। নোটবুকটিতে কিছু লিখে জমা রাখতে চাইলে অ্যাপ ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস ডিভাইসে স্ক্যান করে নেওয়া যাবে। এই নোটবুকগুলো গুগল ড্রাইভ, ওয়ানড্রাইভ এবং ড্রপবক্স সাপোর্ট করে। তাই দ্রুত কিছু নোট করতে চাইলে এটি বেশ কাজের জিনিস।

এলইডি ফেসমাস্ক
মূল্য: ১২০০-১৬০০

করোনা মহামারির সময় থেকে সাশ্রয়ী মূল্যের মধ্যে ফেসমাস্ক উপহার দেওয়ার নতুন চল শুরু হয়েছে। এর মধ্যে এলইডি ফেসমাস্ক নতুন সংযোজন হতে পারে। এতে একটি কম ওজনের ইউএসবি রিচার্জেবল ব্যাটারি আছে, যার মাধ্যমে মাস্কের মধ্যে এলইডি ম্যাট্রিক প্যানেলে এক ধরনের বাতি জ্বলে ওঠে। এই বাতিগুলো ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অনায়াসে জ্বলতে পারে এবং রাত্রিকালীন পার্টি বা কনসার্টে পরার জন্য এই মাস্কটি একইসাথে সচেতনতা আর ফ্যাশন, দুয়েরই প্রতীক হতে পারে। এই মাস্কগুলো অ্যাপ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যার মাধ্যমে শুধু বাতি জ্বালানো-নেভানোই যাবে না, চাইলে বাতির প্যাটার্নও বদলানো যাবে। কেউ চাইলে এই মাস্কে থাকা এলইডি বাতির মাধ্যমে নিজের নাম বা বিভিন্ন ছোটখাটো বার্তাও লিখে রাখতে পারে। তবে লাইট ও ব্যাটারি থাকা সত্ত্বেও এই মাস্ক মোটেও ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং চাইলে সাধারণ মাস্কের মতোই নিয়মিত ব্যবহার করা যাবে। 

অনুবাদ: অনিন্দিতা চৌধুরী
 

Comments