‘রোজায় গিলা-কলিজার দামও বেড়ে গেছে, মুরগির পা কিনে ফিরতে হলো’

'সেহেরিতে শিমভাজি দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম। খেতে কষ্ট হয়েছিল। আজ ভেবেছিলাম মাংস দিয়ে সেহেরি করব। সামর্থ্য নেই, তাই মুরগির গলা কিনলাম।'
কারওয়ান বাজারে মুরগির গিলা-কলিজার দোকানে দরদাম করছেন একজন ক্রেতা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

'ছেলেমেয়েরা মাংস খেতে চেয়েছে। কিন্তু মাংসের যা দাম কী কিনবো! মুরগির গিলা-কলিজারও অনেক দাম। তাই মুরগির পা কিনেছি। এটাই আমাদের কাছে মাংস।'

শুক্রবার বিকেলে কারওয়ান বাজার থেকে মুরগির পা কিনছিলেন রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা হাশেমউদ্দিন। দুই ছেলে এক মেয়েসহ তার পরিবারে মোট ৫ জন সদস্য। পেশায় তিনি ফুটপাতের ব্যবসায়ী।

হাশেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফুটপাতে ব্যবসা করে আয় যা হয়, তা দিয়ে ভালো খাবার কেনা সম্ভব হয় না। বাসা ভাড়াই লাগে সাড়ে ৮ হাজার টাকা।'

হাশেম জানান, বাজারে মুরগির কেজি সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা। কিনতে পারবেন না আগেই জানতেন। তাই ভেবেছিলেন গিলা-কলিজা কিনবেন। কিন্তু তাও ২০০ টাকা কেজি হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত ৮০ টাকা দরে আধা কেজি শুধু মুরগির পা কিনলেন।

একই দোকানে শুধু মুরগির গলা কিনছিলেন মোফাজ্জল হোসেন। ফার্মগেট এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরি করেন তিনি। মাসে বেতন পান সাড়ে ৯ হাজার টাকা। গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় পরিবারের কাছে পাঠান ৫ হাজার টাকা।

জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, 'রোজা শুরু হয়েছে। গতকাল সেহেরিতে শিমভাজি দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম। খেতে কষ্ট হয়েছিল। আজ ভেবেছিলাম মাংস দিয়ে সেহেরি করব। সামর্থ্য নেই, তাই মুরগির গলা কিনলাম। তাও ৭০ টাকা দিয়ে আধা কেজি নিলাম।'

কারওয়ান বাজারে মুরগির গিলা-কলিজা বিক্রি করেন মো. হাসান। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গিলা-কলিজার ক্রেতা অনেক। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্ররা গিলা-কলিজার প্রধান ক্রেতা।'

'মুরগির বড় ক্রেতা হোটেল-রেস্টুরেন্ট' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'হোটেলগুলো সাধারণত গিলা-কলিজা নেয় না। কিন্তু রোজা শুরু হওয়ায়, অনেক হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে গিলা-কলিজার সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে দামও বেড়ে গেছে।'

হাসান জানান, বৃহস্পতিবার শুধু গিলা-কলিজার কেজি ছিল ১২০ টাকা। শুক্রবারই তা বেড়ে ২০০ টাকা কেজি দাঁড়িয়েছে। গলা-পা-পাখনা মিলিয়ে নিলে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শুধু পা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago