তাপপ্রবাহের কারণে অং সান সু চিকে কারাগার থেকে বাড়িতে স্থানান্তর

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। ফাইল ছবি: রয়টার্স
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

কারাবন্দি থেকে গৃহবন্দি হয়েছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। কারণ হিসেবে তাপপ্রবাহের কথা জানিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। 

আজ বুধবার মিয়ানমারের এক সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

দেশটির সামরিক জান্তা জানিয়েছে, তাপপ্রবাহের প্রকোপ থেকে কারাবন্দিদের রক্ষা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সু চিকে কারাগার থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

৭৮ বছর বয়সী নোবেল পুরষ্কার বিজেতা সু চি বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই লোকচক্ষুর অন্তরালে আছেন সু চি।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম না প্রকাশের শর্তে এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, সু চি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি করা হয়েছে।

জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন জানান, তাপপ্রবাহের কারণে কর্তৃপক্ষ দুর্বল ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের কয়েদীদের সুরক্ষা দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

জ মিন তুন এএফপিকে বলেন, 'অত্যন্ত উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে অং সান সু চি ও উইন মিন্টের পাশাপাশি আরও কয়েকজন প্রৌঢ় কয়েদীদেরও বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়েছে।'

আজ বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাষ দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ শহরেই একটি বিশেষভাবে নির্মিত কারাগার কমপাউন্ডে সু চিকে আটক রাখা হয়েছিল।

তাপপ্রবাহ শেষ হলে তিনি কারাগারে ফিরবেন কি না, বা তারা কারাদণ্ড লাঘব করা হবে কি না, সেটাও জানা যায়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে সু চির বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম চলার সময় তিনি নানা অসুস্থতায় ভুগেছেন, এক পর্যায়ে দাঁতের সমস্যার কারণে খাবারও খেতে পারছিলেন না তিনি।

বিশেষভাবে নির্মিত কমপাউন্ডটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলীয় অর্থনীতিবিদ শন টারনেল। তিনি সু চির সরকারের সাবেক উপদেষ্টা। তাকেও একই কমপাউন্ডে বেশ কয়েক মাস আটক রাখা হয়েছিল।

এর আগে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে জনপ্রিয়তা পান সু চি। এই ঘটনার জেরে তাকে তার ঔপনিবেশিক আমলের পারিবারিক বাসস্থানে ১৫ বছর গৃহবন্দি রাখা হয়।

১০ বছরের গণতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী।

এই অভ্যুত্থানে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় তুলে। মিয়ানমারের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা ও উৎখাত হওয়া সরকারের সাবেক নেতা-কর্মীদের সংগঠন এনইউজির জান্তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলেছে। এই সশস্ত্র সংঘাতে চার হাজার ৮০০ জনেরও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্রোহীদের কাছে বেশ কয়েকবার পরাজিত হয়ে ভূখণ্ডের দখল হারিয়েছে সামরিক জান্তা।

Comments

The Daily Star  | English

Rohingya influx: 8 years on, repatriation still elusive

Since the repatriation deal was signed with Myanmar in November 2017, Bangladesh tried but failed to send Rohingyas back.

8h ago