Skip to main content
T
বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩
The Daily Star Bangla
আজকের সংবাদ English
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • স্বাস্থ্য
  • খেলা
  • বাণিজ্য
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • সাহিত্য
  • শিক্ষা
  • প্রযুক্তি
  • প্রবাসে
  • E-paper
  • English
অনুসন্ধান English T
  • আজকের সংবাদ
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • স্বাস্থ্য
  • খেলা
  • বাণিজ্য
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • সাহিত্য
  • শিক্ষা
  • প্রযুক্তি
  • প্রবাসে

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
ক্যাম্পাস
উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনের ৬ মাস

কথা রাখেনি ‘সরকারের উচ্চপর্যায়’, স্বপদে আছেন শাবিপ্রবি উপাচার্য

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিতের ৬ মাস পূর্ণ হচ্ছে শুক্রবার।
দ্বোহা চৌধুরী
বৃহস্পতিবার আগস্ট ১১, ২০২২ ০৯:২৫ অপরাহ্ন সর্বশেষ আপডেট: বৃহস্পতিবার আগস্ট ১১, ২০২২ ০৯:৫৯ অপরাহ্ন
কথা রাখেনি ‘সরকারের উচ্চপর্যায়’, স্বপদে আছেন শাবিপ্রবি উপাচার্য
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক। ২৬ জানুয়ারি ২০২২। স্টার ফাইল ছবি

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিতের ৬ মাস পূর্ণ হচ্ছে শুক্রবার।

সরকারের অনুরোধে শাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষক ড. জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক ২৮ শিক্ষার্থীর ১৬৩ ঘণ্টার অনশন ভাঙান। উপাচার্যের পদত্যাগের ব্যাপারে তখন শাবিপ্রবির সাবেক এই দুই শিক্ষকের মাধ্যমে 'সরকারের উচ্চপর্যায়' থেকে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের কাছে পাঠানোর আশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করেন তারা।

এর পরও শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এখনো স্বপদে বহাল আছেন। শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবির বেশিরভাগই পূরণ হয়নি। প্রত্যাহার হয়নি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলা। উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন না পুলিশের শটগানের ছররা গুলিতে আহত সজল কুন্ডু। তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন ক্যান্টিনটিও ফিরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন।

আন্দোলনকারীরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে।

'সরকারের উচ্চপর্যায়' আশ্বাস দেওয়ার এতদিন পরেও কথা না রাখায় বিব্রত ও ক্ষুব্ধ অধ্যাপক জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমীন হক।

শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ। ছবি: সংগৃহীত

অধ্যাপক ইয়াসমীন হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, তাদেরকে এখনো উচ্চ পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, দাবি পূরণ না হওয়া নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালও উদ্বিগ্ন। তিনি বিষয়টি নিয়ে বারবার সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করছেন। তারা সব দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করছেন।

আরও

১৬৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)'র একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো ফাইলটি ফেরত এসেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে সম্প্রতি বদলী হয়ে আসা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া কোনো উদ্যোগের কথা জানেন না।

ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অনেক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আন্দোলন শুরু হয়েছিল হল সংক্রান্ত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে, সেগুলো সমাধান হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে করা মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছে। উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের বিষয়, সে ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না।'

তিনি মামলা তুলে নেওয়ার কথা দাবি করলেও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান ডেইলি স্টারকে জানান এখনো মামলাগুলোর তদন্ত চলছে। মামলার প্রত্যাহার বা তদন্ত, কোনো বিষয়েই অগ্রগতি নেই।

এর মধ্যে গত ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় শাবিপ্রবির ভেতরে গাজী কালুর টিলায় বেড়াতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বুলবুল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী। ঘটনার সময় বুলবুলের সঙ্গে এক ছাত্রীও ছিলেন।

রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। এদিন উপচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন আন্দোলনকারীরা। স্টার ফাইল ছবি

পরে ২৯ জুলাই বুলবুলের দোয়া মাহফিলে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'ক্যাম্পাসে কোনো শৃঙ্খলা নেই, রাতে-দিনে যে যেভাবে পারে—অবাধ বিচরণ করছে। অনেক সময় এমন পরিস্থিতি দেখা যায়, যা দেখলে আমরা নিজেরাও লজ্জিত বোধ করি।'

উপাচার্যের ইঙ্গিতপূর্ণ ওই মন্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যেই সম্প্রতি প্রথম ছাত্রী হল ও বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষরা পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক ছাত্রীদের রাত ১০টার মধ্যে হলে ঢোকার নির্দেশনা জারি করেন।

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির কাছে ছাত্রীদের অন্যতম দাবি ছিল হলে প্রবেশের সময় বেঁধে দেওয়া যাবে না। কোনো কারণে হলে প্রবেশে দেরি হলে ছাত্রীদের হয়রানি নিয়েও পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ছিল।

সার্বিক বিষয়ে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে কল করা হলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় জানার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি আর সাড়া দেননি।

ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল শাবিপ্রবি। স্টার ফাইল ছবি

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যা বলছেন

আন্দোলনকারী শাবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জাফর স্যার ও ইয়াসমীন ম্যাডাম আসার পর এবং তার পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ নিয়ে আমাদের যে আশা ছিল তার কোনো সন্তোষজনক অগ্রগতি নেই।'

তিনি বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রী নির্দ্দিষ্ট সময়সীমা দেননি। যেহেতু আমাদের মূল দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ারভুক্ত আর রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে আলটিমেটাম দেওয়া উচিত হবে না, তাই নির্ধারিত সময়সীমা আমরা পাইনি। বলা হয়েছিল 'যত দ্রুত সম্ভব'। আমরাও ভেবেছিলাম দ্রুত সমাধান আসবে, কিন্তু এত সময় চলে যাবে ভাবিনি।'

'আমাদের দাবি অনুযায়ী শাবিপ্রবির প্রশাসনিক কিছু পদে রদবদল হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো তুলে নেওয়া হয়নি। মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টগুলো অবশ্য খুলে দেওয়া হয়েছে,' বলেন শাহরিয়ার।

আন্দোলন স্থগিতের পর থেকে শিক্ষামন্ত্রী বা শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। তবে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে বলে জানান তিনি।

আরও

শাবিপ্রবি: প্রাধ্যক্ষ্যবিরোধী আন্দোলন যেভাবে উপাচার্যবিরোধী হলো

আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্যারের (অধ্যাপক জাফর ইকবাল) সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানান যে সরকারের উচ্চ পর্যায় এখনো উনাদের জানাচ্ছে যে আমাদের দাবি দ্রুত পূরণ হবে।'

'আমাদের এই বলে আশ্বাস দেওয়া হয় যে ক্যাম্পাসে প্রশাসনিকভাবে আমাদেরকে হয়রানি করা হবে না। কিন্তু আমরা কয়েকটি ঘটনায় দেখলাম আন্দোলনকারীদের স্পষ্টভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা বিএনসিসি ক্যাডেট, তাদের একজনের ক্যাডেটশিপের বর্ধিত মেয়াদ বিএনসিসির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকের সুপারিশে বাতিল করা হয়েছে। একজনকে বিএনসিসির ক্যাম্পেও যেতে দেওয়া হয়নি। অনশনে অসুস্থ ও পুলিশের হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহন করার কথা থাকলেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।'

রাজ আরও বলেন, 'মূল কথা হলো আমাদের যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে দুয়েকটা বাদে কোনো দাবিই পূরণ করা হয়নি। এগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আমরা অপেক্ষা করতে পারছি না। আমরা সামনে কিছু একটা করব আর জাফর স্যার ও ইয়াসমীন ম্যাডামকেও বলব যাতে উনারা দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেন।'

শাহরিয়ার বলেন, 'যে আশা ছিল, তা ফিকে হয়ে আসছে। এই উপাচার্যের ওপর শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড রাগ ও ক্ষোভ আছে। যেকোনো সময় ক্ষোভের বিস্ফোরণ হবে।'

শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পরও চলতে থাকে আন্দোলন। স্টার ফাইল ছবি

শরীরে ৮০টি ধাতব টুকরা নিয়ে আছেন সজল

১৬ জানুয়ারি আইআইসিটি ভবনের সামনে পুলিশের ছররা গুলির ধাতব টুকরা বিঁধে গুরুতর আহত হন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সজল কুন্ডু। হসপাতালে ২ দিন আইসিইউতে রাখা হয় তাকে। পরে আরও দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা নিতে হয়।

আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে সজল কুন্ডুকে ক্ষতিপুরণ বাবদ ১ কোটি টাকা ও নবম গ্রেডের একটি সরকারি চাকরির দাবি ছিল।

এখনো সজল কুন্ডুর শরীরে প্রায় ৮০টি ধাতব টুকরা থেকে গেছে। ডানহাতেই আছে ৩০টি টুকরা। এই হাত দিয়ে আর ভারী কাজ করতে পারেন না তিনি।

সজল কুন্ডুর ক্ষতিপুরণ ও চাকরি দাবির কোনোটিই পূরণ হয়নি। এছাড়াও তার শেষ অর্থনৈতিক সম্বল, আইআইসিটি ভবনের ক্যান্টিন, যেটি তিনি প্রশাসনের অনুমতিতে পরিচালনা করতেন, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছ।

সজল কুন্ডু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে অপারেশনের মাধ্যমে কয়েকটি ধাতব টুকরা অপসারণ হয়। আমার পরবর্তী চিকিৎসার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া হলেও গত ফেব্রুয়ারি মাসে অপারেশনের সেলাই কাটার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার ছাড়া আর কোনো সহায়তা পাইনি। প্রশাসনের কেউ এখন পর্যন্ত আমার খোঁজ নেয়নি।'

আরও

শাবিপ্রবি পরিস্থিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভাবনা

তিনি বলেন, 'আমার ডানহাতে এখনো ৩০টি ধাতব টুকরা আছে। এই হাতে ভারি কাজ করতে পারি না। দুটি ধাতব টুকরা আমার ফুসফুসের কাছে, সে কারণে মাঝে মধ্যে শ্বাসকষ্টও হয়েছে। শারীরিক এসব সমস্যার মধ্যেও আমার কোন খোঁজ তো নেয়নি, বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার একমাত্র আর্থিক অবলম্বনও কেঁড়ে নিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'গত বছরের ডিসেম্বর প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে আইআইসিটি ভবনের ক্যান্টিন পরিচালনা শুরু করি। ১৬ তারিখ যখন শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা করে, তখন আমি ক্যান্টিনে ছিলাম। হামলা প্রতিহত করতে বেরিয়ে এসে আমি আহত হই।'

সজল বলেন, '১৭ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসা শেষে ফিরে এসে ক্যান্টিন খুলি। তখন খেয়াল করি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের কথাবার্তা পাল্টে গেছে। তারা আমাকে নানাভাবে হয়রানি শুরু করেন। এপ্রিলে ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তারা ক্যান্টিনের চাবি নিয়ে নেয়। ছুটি শেষে আমাকে বলা হয় মার্চে নতুন নীতিমালা হয়েছে তাই আমাকে চাবি দেওয়া যাবে না।'

'প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট আইডেন্টিফিকেশন নাম্বারসব বিভিন্ন দরকারী কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর আমাকে জানানো হয় যে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে এবং এরপর যে ইজারা পাবে, সে ক্যান্টিন চালাবে,' বলেন তিনি।

সজল বলেন, 'আমার বাবা নেই, মা অসুস্থ। আমার উপার্জনেই পরিবার চলে। মায়ের সঞ্চয় দিয়ে এই ক্যান্টিনের দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র ১৫ দিন চালাতে পেরেছি। এতে আমার কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক আন্দোলনের অংশ হয়ে যাওয়ায় আমাকে ক্ষতিপুরণ তো দেওয়া হচ্ছেই না, বরং আমার একমাত্র আর্থিক অবলম্বনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।'

হাজারো শিক্ষার্থীর স্লোগানে মুখর শাবিপ্রবি। স্টার ফাইল ছবি

অধ্যাপক ইয়াসমীন হক যা বলছেন

শাবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হক ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, 'শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছে তখন আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসি। আমরা শাবিপ্রবিতে যাওয়ার আগে বাসায় এনএসআই (জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা)'র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলসহ অন্যান্যরা এসেছিলেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শেই এসেছিলেন কারণ এটা শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় ছিলো না, জাতীয় বিষয় হয়ে দাড়িয়েছিল।'

তিনি বলেন, 'তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে অনশন ভাঙলেই সঙ্গে সঙ্গে সব মামলা প্রত্যাহার হবে। উপাচার্যকে ২/৩ মাসের মধ্যে সরানো হবে, যেভানে গোপালগঞ্জের উপাচার্যকে সরানো হয়েছিল। তাদের একটাই দাবি ছিল যে করেই হোক শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে অনশন ভাঙাতে হবে। অনশন খুব ক্রিটিক্যাল স্টেজে ছিল। একজন শিক্ষার্থীও যদি মারা যেতো তাহলে এটা অন্যদিকে মোড় নিত।'

'এখন আমি হিসাব রাখছি, জানুয়ারি থেকে ৬ মাস হয়ে গেছে। এতদিন পর্যন্ত কোনো কিছু হয়নি। জানতে চাইলেই বারবার আশ্বস্ত করা হয়। আমরাও আমাদের যা করার, ফোনের পর ফোন করে যাচ্ছি। এখন যদি না হয় তো কিছু বলার নেই। সরকার নিজেই জানে কখন হবে, কী হবে।'

আরও

শাবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি সংসদে

অধ্যাপক ইয়াসমীন আরও বলেন, 'ওদের যে প্রতিজ্ঞা, এটা তো শুধু আমাদের সঙ্গে না। পুরো দেশের মানুষের সঙ্গে যারা সবকিছু সরাসরি দেখছিল। এখন সরকারই বা কোথায় এসে দাড়ায়? সিনিয়র সিনিয়র সব লোক, তারা কীভাবে তাদের দেওয়া কথা রাখতে পারে না!'

'তবে উনারা আশ্বাস না দিলেও আমরা শাবিপ্রবিতে যেতাম। শাবিপ্রবির হলের নামকরণ আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি অনশনে শিক্ষার্থীদের কী অবস্থা হয়। সে কথা চিন্তা করেই আমরা তাদের কাছে যেতাম', বলেন তিনি।

অধ্যাপক ইয়াসমীন বলেন, 'এই উপাচার্য আন্দোলনকারীদের ভোগান্তিতে ফেলছেন। মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে না। সজল কুন্ডুর এক হাত প্রায় অচল, অথচ তার ক্যান্টিন নিয়ে নিয়েছে। এসবই বন্ধ হয়ে যেতো যদি উপাচার্য পরিবর্তন হতো।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি বা জাফর ইকবাল কিন্তু সরকারের কেউ না, বিশ্ববিদ্যালয়েরও না। কিন্তু আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা আছে এবং আমাদের বিশ্বাস ওরা আমাদের ভুল বুঝবে না।'

ব্যানারের ছবিতে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি। স্টার ফাইল ছবি

শাবিপ্রবির উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন

গত ১৩ জানুয়ারি শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ওই হলের আবাসিক ছাত্রীরা। ১৫ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে ছাত্রলীগের একাংশ ও প্রশাসনিক কর্মচারীরা।

পরদিন সকাল থেকে আবারও আন্দোলনে নামেন ছাত্রীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সেদিন আন্দোলনে যুক্ত হন।

সেদিন বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে অ্যাকডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে যাওয়ার পথে তার পথ আগলে দাঁড়ান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা তাদের দাবিগুলোর বিষয়ে কথা বলতে চান।

এক পর্যায়ে উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপাচার্যকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে প্রবেশ করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভবনের প্রধান ফটকে তালা দেন।

দুপুর ২টার দিকে উপাচার্য ও প্রক্টরের অনুরোধে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় ক্যাম্পাসে। উপাচার্যকে আইআইসিটি ভবন থেকে বের করতে পুলিশের ক্রিটিক্যাল রেসপন্স টিমের (সিআরটি) ইউনিটও পৌঁছায় ক্যাম্পাসে।

আরও

শাবিপ্রবি উপাচার্যকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি জাবি শিক্ষার্থীদের

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবরুদ্ধ ভবনের তালা খোলার বিষয়ে এবং দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য কথা বলতে যান শিক্ষকরা।

আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে এক পর্যায়ে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়ে। পুলিশ রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।

এ ছাড়াও, ১০ পুলিশ সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ আহত হন বলে জানায় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে রাতেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছে খোলা চিঠি লিখেন শিক্ষার্থীরা। পরদিন সেই চিঠি ডাক বিভাগের মাধ্যমে বঙ্গভবনে পাঠানো হয়।

১৯ জানুয়ারি বিকেল ২টা ৫০ মিনিট থেকে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

এর মধ্যে ১ জন শিক্ষার্থীর বাবার অসুস্থতার কারণে অনশন ত্যাগ করেন এবং আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন।

২৬ জানুয়ারি ভোররাতে ক্যাম্পাসে আসেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমীন হক। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে, এমন বার্তা নিয়ে আসেন তারা। তাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে ১৬৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন ২৮ শিক্ষার্থী। তবে আন্দোলন চালিয়ে যান তারা।

১১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরকে সব দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন এবং উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আশ্বাস দেন।

পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা একটি সাধারণ সভা শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।

সম্পর্কিত বিষয়:
শাবিপ্রবিসাস্টউপাচার্যভিসি পদত্যাগঅধ্যাপক জাফর ইকবালইয়াসমিন হকসাস্ট ক্যাম্পাসে পুলিশের হামলাউপাচার্যের পদত্যাগ
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

সম্পর্কিত খবর

৬ মাস আগে | মতামত

ভিসিরা এমন কেন?

৭ মাস আগে | ক্যাম্পাস

জাবির উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেলেন অধ্যাপক আমির হোসেন

৭ মাস আগে | ক্যাম্পাস

শাবিপ্রবিতে ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থী নিহত

৯ মাস আগে | প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বন্যায় শাবিপ্রবির ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

৭ মাস আগে | অপরাধ ও বিচার

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী হত্যা: সন্দেহভাজন ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ

The Daily Star  | English

Bangladesh now a hub for making winter jackets

Bangladesh has gradually turned into a major manufacturing hub for winter jackets as work orders are mainly shifting away from China due to higher production costs and a shortage of skilled workers in the country.

2h ago

Cattle fatteners to get loans from Tk 5,000cr BB fund

36m ago
The Daily Star
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2023 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.