‘উন্নয়ন ফি’ না পেয়ে জাবির বিভাগগুলো বিপাকে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রশাসন থেকে বার্ষিক উন্নয়ন ফি না পাওয়ায় সমস্যার মধ্যে কাজ চালাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রশাসন থেকে বার্ষিক উন্নয়ন ফি না পাওয়ায় সমস্যার মধ্যে কাজ চালাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা।

তারা জানান, বিভাগগুলোতে লেখার মার্কার থেকে শুরু করে প্রিন্টের কাগজ কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। টাকার অভাবে আটকে আছে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজও।

এ বছর বিভাগ উন্নয়ন ফি পেতে দেরি হওয়ায় কলা ও মানবিকী অনুষদের সভাপতিরা উপাচার্যের কাছে গত মার্চে একটি আবেদনপত্র দেন। কিন্তু এখনো উন্নয়ন ফি পাননি বলে জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ ভূঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিভাগগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ। এগুলো পরিচালনার খরচের দায়িত্বও প্রশাসনের। প্রশাসন খরচ না দিলে বিভাগগুলো চলবে কীভাবে? মার্কার, কাগজ কিনতেও অনেক টাকা লাগে। বিশ্ববিদ্যালয় টাকা না দিলে আমরা এগুলো কোথায় পাব। এভাবে তো বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না।'

তারা জানান, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বশেষ বিভাগ উন্নয়ন ফি বাবদ টাকা নেওয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালে আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগ উন্নয়ন ফি (শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা) বাতিল করে।

ফলে ২০১৯-২০, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার সময় আলাদা করে বিভাগ উন্নয়ন ফি দিতে হয়নি। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগ উন্নয়নের জন্য ফি বরাদ্দ দিয়েছে বিভাগগুলোতে।

বিগত ২ বছর এমন হয়ে আসলেও এ বছর এখনো কোনো উন্নয়ন ফি পায়নি বিভাগগুলো।
 
এ বিষয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন রাকিব আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগগুলোর উন্নয়নের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে। সেটা পরবর্তীতে বিভাগের উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়।। কিন্তু এ বছর আমরা এখনো তা পাইনি।'

'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেরি করছে দেখে টাকা চেয়ে আমরা (কলা ও মানবিকী অনুষদের বিভাগগুলোর সভাপতিরা) আবেদন করেছি প্রায় ৩ মাস হতে চলল। তারপরও এটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কালক্ষেপণ করছে, যেটা হতাশাজনক। প্রশাসনের উচিত অতি দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা', বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক এম শামীম কায়সার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি আইআইটি এর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছি। এই ফি আমার ইন্সটিটিউটও পায়। এই ফি বিভাগগুলোর জন্য খুবই দরকার।'

'আমি যতদূর বলতে পারি, এ বছরের টাকা অবশ্যই দেওয়া হবে', বলেন তিনি।

চিঠি দেওয়ার এতদিন পেরিয়ে গেলেও কেন উন্নয়ন ফি দেওয়া হচ্ছে না, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার কাছে আসা নথি ঈদের আগেই ছেড়ে দিয়েছি।'

সেই নথি এখন কার কাছে আটকে আছে সেটা জানা সম্ভব হয়নি।
 
এ বিষয়ে জানতে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলমের অফিসে দু-দফা গেলেও তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানানো হয়। পরে ফোন করলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান। আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Comments