ঢাবি: ছিনতাই-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৬০ জনের শাস্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। 

সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন- মৃৎশিল্প বিভাগের জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদ। 

এ ছাড়া, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। 

শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী গত রোববার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় বহিষ্কারের এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মাহমুদ আলম জানান, মৃৎশিল্প বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে আটক রেখে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই ঘটনায় ভিকটিম শিক্ষার্থীর পিতা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
 
সাময়িক বহিষ্কৃত ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনে ঘুরতে আসা দুজন দর্শনার্থীর গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি মারধর করে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভিকটিম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত এই চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী অভিযোগে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
 
সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি সংশ্লিষ্ট থানা, শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবক এবং স্থায়ী ঠিকানায় প্রেরণ করা হবে। বহিষ্কৃত এই সাত শিক্ষার্থী বহিষ্কারাদেশ চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় হলে অবস্থান করতে পারবে না। তাদের কৃত অপরাধের জন্য 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না' মর্মে কারণ দর্শানো এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া, ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমান দোকান থেকে চাঁদা গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রক্টর অফিসের মো. শামীম হোসেনকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুইজনকে পরীক্ষাসহ তিন সেমিস্টার, ৪০ জনকে পরীক্ষাসহ দুই সেমিস্টার এবং ১৮ জনকে পরীক্ষাসহ এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর  (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ সিন্ডিকেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Mob violence now alarmingly routine

Rights groups say the state's failure to act swiftly and decisively has to some extent emboldened mobs and contributed to a climate where vigilante justice is becoming commonplace.

10h ago