চবি থেকে বহিষ্কৃত হয়েও পরীক্ষা দিলেন ছাত্রলীগ কর্মী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বহিষ্কার হয়েও পরীক্ষা দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী। 
মাহমুদুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বহিষ্কার হয়েও পরীক্ষা দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী। 

বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মী মাহমুদুল হাসান (ইলিয়াস) উপগ্রুপ সিক্সটি নাইনের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। 

আজ বুধবার কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ৪২০ নম্বর কক্ষে তিনি ৩০৯ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা দেন।

গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় মাহমুদুল হাসানসহ ৬ শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিল।

ওই ঘটনায় চবি শাখা ছাত্রলীগের ১১ নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আরও আহত হন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম।

গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় লিখিত আদেশ তৈরি করে এ তথ্য জানায় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩ নভেম্বর। পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ২৩ জানুয়ারি। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ৩০৯ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

জানতে চাইলে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ বশির আহম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।  কর্তৃপক্ষের কেউ বিষয়টি জানালে এমনটি হতো না।'

যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব রবিউল হাসান ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকেই আমরা লিখিত আদেশ তৈরি করে সাংবাদিকদের জানিয়েছি। এর কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। তাই বিভাগগুলোতে জানানো হয়নি।'
  
তবে বহিষ্কার আদেশ কবে থেকে কার্যকর হবে বা আজকের পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিল করা হবে কি না, জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই। উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারব।'

গত সোমবার থেকে এ আদেশ কার্যকর ধরা হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। 

বহিষ্কার হয়েও পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারই প্রথম নয়। এর আগে গত বছরের ৩ আগস্ট ছাত্রী হেনস্তার দায়ে বহিষ্কৃত হয়েও পরীক্ষা দিয়েছিলেন ছাত্রলীগের দুই কর্মী। 

তারা হলেন-ইমন আহম্মেদ ও রাকিব হাসান। ২০২১ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে হেনস্তার দায়ে ১ বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। 

পরে অবশ্য এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাদের উত্তরপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের অনুসারীরা। এর ৪ দিন পর ১২ ছাত্রলীগ কর্মীকে ৬ মাসের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

এরপর বহিষ্কৃত হয়েও ২ মাসের মাথায় ডিসেম্বর মাসে স্নাতকের প্রথম বর্ষের ৩ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন বলে অভিযোগ আছে। 

তারা হলেন-আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের বর্তমান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নাঈম, একই বর্ষের বাংলা বিভাগের সাইফুল ইসলাম ও আরবি বিভাগের তৌহিদ ইসলাম।

তখনো ৩ বিভাগের প্রধান দাবি করেন, তারা চিঠি পাননি। 

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago