কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, বুধবার বিকেলের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের বন্ধ, বুধবার বিকেলের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় | ছবি: স্টার

ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ঘটনার জেরে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় আবাসিক হলগুলোও বন্ধ থাকবে। বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। শুধুমাত্র জিএসটি ২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

সিন্ডিকেট সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট সমাধানে আলাপ-আলোচনা করে দুটি কমিটি গঠন করা হবে। একটি কমিটি হবে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে এবং অন্যটি হবে ২৮ এপ্রিল সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তদন্তের জন্য।

এর আগে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. মুর্শেদ রায়হান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. শামিমুল ইসলাম, লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় অভিযোগ দেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ছাদেক হোসেন মজুমদার।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, গত ২৮ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটকে 'দাঙ্গার জন্য' সমবেত হন। তাঁরা উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের দপ্তরে ঢুকতে বাধা দেন এবং টানা-হেঁচড়া করেন।

এর আগে ২৮ এপ্রিল আবু তাহের বাদী হয়ে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর ও ছাত্রলীগের সাবেক ১৭ জন নেতাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

প্রসঙ্গত, সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা।

তাদের প্রধান দাবি হলো—১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা ও ঘটনার তদন্ত; হামলায় মদদ দেওয়া প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে অপসারণ; ঢাকার অতিথিশালা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা; অধ্যাপক গ্রেড ১ ও ২-তে আবেদন করা শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ এবং ইতোমধ্যে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাহার; শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি স্থায়ীকরণে আইনবহির্ভূত শর্তারোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা; ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা প্রত্যাহার করে আগের নীতিমালা বহাল এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।

ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার মতো এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। উপাচার্য নিজের গা বাঁচানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখানে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী টিউশনি করে চলে, তাদের জন্য হল বন্ধ ঘোষণা একটি বিপর্যয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Lifts at public hospitals: Where Horror Abounds

Shipon Mia (not his real name) fears for his life throughout the hours he works as a liftman at a building of Sir Salimullah Medical College, commonly known as Mitford hospital, in the capital.

4h ago