গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে রাবি ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চারুকলা অনুষদের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: স্টার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চারুকলা অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান পুলক, চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী আলী আকবর ফয়েজী অপু এবং ফাইন্যান্স বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ শেখ বন্ধন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চারুকলা অনুষদের মুক্তমঞ্চের পেছনে বসে গাঁজা সেবন করছিল ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। এসময় ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপ নিষেধ করলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।  

চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা জানান, চারুকলার রফিকের দোকানের সামনে বন্ধন ও তার বন্ধুদের সঙ্গে পুলকের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা পুলককে মারধর করে। পুলকও তার হেলমেট দিয়ে বন্ধনের মাথায় আঘাত করে। পরে বন্ধন আরও কয়েকজনকে নিয়ে রফিকের দোকানে অবস্থানরত পুলককে আবারও মারধর করে এবং পুলকের সঙ্গে থাকা অপুকেও আঘাত করে। এসময় বন্ধনের গ্রুপ রফিকের দোকান ভাঙচুর করে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সংঘর্ষে জড়িতরা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। বন্ধন মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক এবং পুলক ছাত্রলীগের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

সংঘর্ষে আহত পুলক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্ধন ও তার বন্ধুরা চারুকলার মুক্তমঞ্চের পেছনে বসে গাঁজা সেবন করছিল। আমি এবং অপু ভাই নিষেধ করলে তারা আমাকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে মারধর শুরু করে। এসময় আমরা পাশেই রফিক ভাইয়ের দোকানে চলে যাই। পরে আমি ফোন করে সবাইকে আসতে বলি। রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিব ভাইকেও আসতে বলি। এসময় বন্ধনরা বাঁশ ও লাঠি হাতে প্রায় ৪০-৫০ জন জড়ো হয়ে রফিক ভাইয়ের দোকানে এসে আমাকে মারধর শুরু করে। তারা অপু ভাইকেও মারধর করে। অপু ভাইয়ের গাড়ি ভাঙচুর করে। সেসময় আমি তাদের বলি যে, গালিব ভাইয়েরা আসছেন, তারা আসলে আমরা কথা বলি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি, আমাকে মারধর করতে থাকে। মেডিকেল সেন্টারে এসেও তাদের ভয়ে চিকিৎসা নিতে পারছিলাম না। পরে ভাইয়েরা আসলে চিকিৎসা নেই।' 

অপরদিকে, গাঁজা সেবনের অভিযোগ অস্বীকার করে বন্ধন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চারুকলায় অবস্থানকালে হঠাৎ ক্যাম্পাসের কয়েকজন আমার কাছে জানতে চায়- তোরা কারা, কী করতে এসেছিস? আমরা পরিচয় দেওয়ার পরও তাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। তারপর সেখানে অপু ভাই এবং পুলক ভাই উপস্থিত হন। তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং আমার পোশাক ধরে টানাটানি করেন ও আমাকে চর-থাপ্পড় দেন। তখন আমার জামা ছিঁড়ে যায়। সেসময় তাদের একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেন।'

দোকানদার রফিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্ধনরা আমার দোকান ভাঙচুর করে ৫-৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।' 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থলে এসে জানতে পেরেছি, গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। যারা মার খেয়েছে এবং মেরেছে, উভয়পক্ষই দাবি করছে যে- তারা আমাদের ছাত্র। যেহেতু ঘটনাটি চারুকলা অনুষদের ভেতরে ঘটেছে, তাই আমি তাদের ডিন বরাবর একটি আবেদন করতে বলেছি। তারপর ডিন তদন্তের ব্যবস্থা করবেন এবং আমরাও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।' 

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। পরে ঘটনার কথা জেনে ঘটনাস্থলে এসে শুনি বহিরাগতরা এখানে গাঁজা সেবন করছিল। আমাদের কিছু ছাত্র নিষেধ করায় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

1h ago