ক্লাস না করে, মূল্যায়ন পরীক্ষা না দিয়েও বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাকে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে অনুমতি

‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন অমি প্রথমবারের মতো চলমান চতুর্থ প্রফ বা চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

কোনো ক্লাসে উপস্থিতি ও প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন ছাড়াই ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জন (বিডিএস) চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে একজন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাকে অনুমতি দিয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) কর্তৃপক্ষ।

'বিশেষ ব্যবস্থায়' ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন অমি প্রথমবারের মতো চলমান চতুর্থ প্রফ বা চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

মাদক ও যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর 'নৈতিক স্খলনের' অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিয়মের বরাত দিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে একজন বিডিএস শিক্ষার্থীকে তৃতীয় প্রফ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে ১২ মাস সময় পূর্ণ করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিতি প্রয়োজন এবং সব ইন-কোর্স ও এন্ড-কোর্স মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হতে হবে, যাতে তারা সঠিক 'ক্লিনিক্যাল দক্ষতা ও পারদর্শিতা' অর্জন করতে পারেন।

কিন্তু অমি গত ২০ জুন, ২০২৩ তারিখে ঘোষিত তার তৃতীয় প্রফ ফলাফলের ১২ মাস পূর্ণ হওয়ার আগে ২৯ মে থেকে শুরু হওয়া চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

কর্মকর্তারা জানান, অমি একটি ক্লাসও করেননি এবং তিনি কোনো মূল্যায়নেও অংশ নেয়নি।

তবে কলেজের অন্তত ৯ জন নিয়মিত বিডিএস শিক্ষার্থী কম উপস্থিতি ও মূল্যায়নে অকৃতকার্য হওয়ায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি।

জাকির হোসেন অমি স্বীকার করেছেন, রাজনৈতিক কারণে তিনি কোনো ক্লাস ও মূল্যায়নে অংশ নিতে পারেননি।

তিনি বলেন, 'রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে আমি পিছিয়ে পড়েছি। আমি শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করেছি।'

অমি ডেন্টাল ইউনিট প্রধানকে তার দেখভালকারী শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করেন।

জানতে চাইলে ইউনিট প্রধান সহকারী অধ্যাপক হাবিবুল হাসান বলেন, 'অমিকে এভাবে শেখানোর কথা আমি মনে করতে পারছি না।'

তিনি বলেন, 'আমাকে কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।'

এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নওশাদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অমি একজন অনিয়মিত ছাত্র ছিল।

তিনি বলেন, 'কোনো শিক্ষার্থী প্রথমবার চূড়ান্ত পরীক্ষা দিলে আমরা (বিএমডিসি) নিয়মগুলো যাচাই করি। কিন্তু সে (অমি) এরই মধ্যে কয়েকবার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এবং অকৃতকার্য হয়েছে।'

অমি এবারই প্রথমবার পরীক্ষা দিচ্ছে বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন যে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago