পা দিয়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেলেন মানিক

কোনো প্রতিবন্ধকতাই অন্তরায় হতে পারেনি মানিক রহমানের (১৬)। দুই হাত না থাকলেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছেন মানিক।
মানিক কুড়িগ্রাম
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছেন মানিক। ছবি: এস দিলীপ রায়

কোনো প্রতিবন্ধকতাই অন্তরায় হতে পারেনি মানিক রহমানের (১৬)। দুই হাত না থাকলেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছেন মানিক।

মানিক এসএসসি পরীক্ষায় ১২৪২ মার্ক পেয়েছেন যা ফুলবাড়ী উপজেলায় সর্বোচ্চ। মানিকের ফলে খুশি পরিবারের লোকজন, শিক্ষক ও সহপাঠীরা।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও মরিয়ম বেগমের ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে মানিক বড়। তার ছোট ভাই মাহমুদুর রহমান ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

মানিক এবার ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ২০১৬ সালে জছি মিঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে এ-প্লাস এবং ২০২০ সালে ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।

মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার ছেলে মানিক বড় হয়ে উঠছে। মানিকের দুটো হাত না থাকলেও পা দিয়েই সব কাজ করে। পা দিয়েই কম্পিউটার টাইপিং, ইন্টারনেট ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে।

'আমাদের ছেলে মানিক সত্যিই আমাদের কাছে মানিক। সে কঠোর পরিশ্রমী। পড়াশোনায় খুবই আগ্রহী। এসএসসি পরীক্ষায় তার ফল আমাদেরকে গর্বিত করেছে।'

মানিকের মা মরিয়ম বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মানিকের এসএসসি রেজাল্ট আমাদের খুশি করেছে। তাকে নিয়ে গর্ববোধ করছি। মানিক একদিন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে এটা আমরা বিশ্বাস করি।'

মানিক রহমান বলেন, 'আমি এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমার বাবা-মা, শিক্ষক ও সহপাঠীরা সর্বদা আমাকে অনুপ্রেরণা যোগায়। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।'

ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মানিকের এসএসসির ফলাফল ফুলবাড়ী উপজেলায় সর্বোচ্চ ফলাফল। আশা করা হচ্ছে দিনাজপুর বোর্ডে তার ফলাফল একটি অবস্থানে থাকবে।

'অদম্য মেধাবী মানিক আমাদের বিদ্যালয়কে এবং আমাদেরকে গর্বিত করেছে। মানিক আমাদের এলাকায় শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত।'

Comments