শিক্ষা

করোনা মহামারিতে দূরশিক্ষণে অংশ নেয়নি ৮১ শতাংশ শিশু: ইউনিসেফ

করোনা মহামারি চলাকালে স্কুল বন্ধ থাকার সময় প্রতি ৫ জন শিশুর মধ্যে একজনের কম দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিল।
শিশু
ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারি চলাকালে স্কুল বন্ধ থাকার সময় প্রতি ৫ জন শিশুর মধ্যে একজনের কম দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিল। একটি জরিপে দেখা গেছে, ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিল। অর্থাৎ, ৮১ দশমিক ৩ শতাংশ শিশু দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেয়নি।

মহামারির কারণে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ ছিল, বাংলাদেশ সেগুলোর একটি। 

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত 'ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেনস এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১' শীর্ষক জরিপের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। শিশুদের লেখাপড়ার ওপর স্কুল বন্ধ থাকার প্রভাব জানতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফ যৌথভাবে এ জরিপ পরিচালনা করে।

করোনা মহামারি চলাকালে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের এমন ভয়াবহ প্রভাবের বিষয় উঠে এসেছে জরিপে।

জরিপে দেখা যায়, করোনার সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুরা, যাদের ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ব্যবহারের সুযোগ সীমিত এবং যাদের বাড়িতে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মত সহায়ক ডিভাইসের অভাব রয়েছে। 

এছাড়া, শহর এলাকার শিশুদের (২৮ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় কম সংখ্যক শিশু (১৫ দশমিক ৯ শতাংশ) দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশ নেয়।

বড় ধরনের ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টিও জরিপে উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি ছিল খুলনা ও ঢাকায় এবং সবচেয়ে কম ছিল ময়মনসিংহে। খুলনায় ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ঢাকায় ২৩ দশমিক ১ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

সবচেয়ে কম বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে। দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণের হার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ক্ষেত্রে কম ছিল। নিম্ন মাধ্যমিকে ছিল ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও উচ্চ মাধ্যমিকে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও প্রাথমিকে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। 

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, 'শিশুদের ওপর মহামারির প্রভাব দেশজুড়ে এখনো একই রকম। শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও বেশি মাত্রায় অভিঘাত সহনশীল করতে ডিজিটাল-বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে।'

উদ্ভাবনী প্রতিকারমূলক শিক্ষাসহ পড়াশোনার ক্ষতি দূর করতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, 'জরিপটি করোনা মহামারি চলাকালে দীর্ঘস্থায়ী স্কুল বন্ধের কারণে শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি, স্কুলের বাইরে থাকা, ঝরে পড়া ও শেখার ক্ষতিসহ শিক্ষার অন্যান্য ফলাফলের ওপর প্রভাব বুঝতে সাহায্য করবে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।'

জরিপে শিশু-বিয়ে সম্পর্কিত মহামারি-পরবর্তী প্রাথমিক উপাত্তও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জরিপটি এক্ষেত্রে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে।

Comments