মিরর মিথ

ইংরেজি ভাষার জড়তা কাটাতে আয়নার সামনে কথা বলা কতটা কার্যকরী

চর্চা হিসেবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার চেষ্টা চমৎকার এক কৌশল, তা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। তবে এ চর্চাটি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না অথবা ইংরেজিতে কথা বলার প্রচেষ্টায় যারা একদম গোড়াতে আছেন, তাদের ক্ষেত্রে এটা কার্যকরী, নাকি বুমেরাং হয়ে ওঠে তা নিয়ে এবারের আলোচনা। 
ইংরেজি ভাষার জড়তা কাটাতে আয়নার সামনে কথা বলা কতটা কার্যকরী
ছবি: সংগৃহীত

যারা ইংরেজিতে কথা বলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন, জড়তার কারণে সঠিকভাবে ভাবনা অনুযায়ী কথা বলতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন, অনেকে তাদের পরামর্শ দেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলার চর্চা গড়ে তুলতে। 

চর্চা হিসেবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার চেষ্টা চমৎকার এক কৌশল, তা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। তবে উক্ত চর্চাটি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না অথবা ইংরেজিতে কথা বলার প্রচেষ্টায় যারা একদম গোড়াতে আছেন, তাদের ক্ষেত্রে তা কার্যকরী নাকি বুমেরাং হয়ে ওঠে তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। 

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার চর্চা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে, শারীরিক ভাষা নির্ধারণে যথেষ্ট সাহায্য করে, সেটা প্রমাণিত সত্য। তবে যারা ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টায় সবেমাত্র পথ হাঁটা শুরু করেছেন তাদের জন্য এই চর্চা সম্ভবত খুব একটা কার্যকরী হয়ে ওঠে না। 

কার্যকরী না হওয়ার প্রধানতম কারণ হচ্ছে, যারা কেবল ইংরেজিতে কথা বলতে চেষ্টা শুরু করছেন, তারা ঠিকঠাক বাক্য গঠনে, শব্দের প্রয়োগে সমস্যায় পড়েন; এতে করে তাদের মাঝে এমনিতেই এক প্রকারের ভয়, স্নায়ুচাপ কাজ করে। এরপর যখন তারা নিজেদের আয়নায় দেখতে পান, তখন মনস্তাত্ত্বিক কারণে তাদের ভয়-চাপ আরও বেড়ে যায়। এতে তারা ইংরেজিতে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। 

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আয়নায় তাকিয়ে কথা বলতে গেলে সাধারণত নিজের অঙ্গভঙ্গির দিকে অনেকবেশি নজর চলে যায়, এতে করে ভাষাগত ত্রুটি কাটানোয় মনযোগ দেওয়া যায় না। 

এ ছাড়া আছে, নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলার মতো পরিস্থিতি যেহেতু বাস্তবে ততটা দরকার পড়ে না, তাই এ ধরনের চর্চার উপযোগিতা কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। 

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার চর্চা অনেক বেশি সাহায্য করে তাদেরকে, যারা জনসম্মুখে বক্তব্য রাখতে চান। কারণ জনসম্মুখে বক্তব্য দিতে গেলে নান্দনিক শারীরিক ভাষা বা কথা বলার সময় অঙ্গভঙ্গি অথবা কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের উপস্থিতি বেশ দরকার হয়। এ সব বিষয় নিজেকে আয়নায় দেখে ঠিক করে নেওয়া যায়।

যারা ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করতে চান, তাদের জন্য এই চর্চা যদি কার্যকরী না হয় তবে, এতে বারংবার সময় দিয়ে ধৈর্য হারানো উচিত হবে না। তাদের জন্য এমন ক্ষেত্রে বরং কার্যকরী চর্চা হবে কয়েকজন মিলে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা শুরু করা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলা। 

সবার সঙ্গে মিলে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টায় নতুন নতুন বিষয়কে বেছে নেওয়া যেতে পারে। করা যেতে পারে প্রশ্ন-উত্তর ভিত্তিক চর্চা। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে, কথা বলার সময় ভুল কী হচ্ছে তার তালিকা রাখা এবং পরবর্তীতে তালিকায় থাকা ভুলের পুনরাবৃত্তি না করা। ভুলের পুনরাবৃত্তি না করার জন্য ভুল কোথায় হলো সেই ব্যাখ্যা বুঝে নেওয়াও জরুরি। 

ইংরেজিতে কথা বলার চর্চায় অন্য কাউকে না পেলে একা একা কথা বলা যেতে পারে, কিন্তু তা আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে করে শুধুশুধু মানসিক চাপ অনুভব করার কোনো দরকার নেই। বরং নিজেকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে চিন্তা করে সেই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ইংরেজি কথাগুলো কী হতে পারে, সেগুলো গুনগুনিয়ে বা আওয়াজ করে বলা। পরিস্থিতি অনুযায়ী ইংরেজি কথা কী হবে তা জানার জন্য ইংরেজি ভাষার কন্টেন্ট দেখা বা পড়া যেতে পারে। 

ভয়, স্নায়ুচাপ, অঙ্গভঙ্গির দিকে বেশি মনযোগ এবং ইংরেজিতে কথা বলায় নিজেদের দক্ষতা শুরুর দিকে থাকায় অনেকের ক্ষেত্রেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার চর্চা কার্যকরী হয়ে ওঠে না। কারও জন্য উক্ত পন্থা কার্যকরী না হলে তাতে আশা হারানোর কিছু নেই। বরং তাদের উচিত হবে ইংরেজির সঠিক বাক্য গঠন ও শব্দের ব্যবহার শেখায় মনযোগ দেওয়া, বাস্তবিক পরিস্থিতিনির্ভর কথা বলার চর্চায় অংশগ্রহণ করা এবং ধীরেধীরে ভুল দূর করে বাধাহীনভাবে ইংরেজিতে কথা বলার পথে এগিয়ে যাওয়া। 

Comments