কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট: বন্যার পানি কমার পর ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা-ধরলায় ভাঙন

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে নয়ারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ছবি: সংগৃহীত

নদ-নদীর পানি কমায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। রাস্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া বানভাসিরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।

তবে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র ও ধরলাপাড়ে বিভিন্ন বন্যা উপদ্রুত এলাকায় এখনো বন্যার পানি রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেসব এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার আশা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বন্যার পানি নামতে শুরু করায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগান ও নানা স্থাপনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, বন্যার পানি নামতে শুরু করায় কমপক্ষে ৬০ স্থানে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। আপাতত বড় ধরনের ভাঙন দেখা যাচ্ছে না। আশংকা করা হচ্ছে ৬-৭ স্থানে নদীভাঙন তীব্র হতে পারে।

আজ শুক্রবার সকাল থেকে ব্রহ্মপুত্রের পানি কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলার পানি কুড়িগ্রামে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢল না থাকায় পানি কমা অব্যাহত আছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া বানভাসিরা বসতভিটায় ফিরছেন। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির আপাতত কোনো পূর্বাভাস নেই বলে তিনি জানান।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র পাড়ে চর পূর্ব দৈখাওয়ার বানভাসি মকবুল হোসেন (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বাড়িতে ফিরছি। বন্যার কারণে ১০ দিন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তাপাড় চর গোকুন্ডা গ্রামের বানভাসি সেরাজুল ইসলাম (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৭ দিন রাস্তায় ছিলাম। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আবাদি জমি ও ফলের বাগান বিলীন হচ্ছে। বসতভিটাও ঝুঁকিতে আছে। বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই নদীভাঙনের দুশ্চিন্তায় দিশেহারা।'

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র পাড়ে নয়ারহাট এলাকায় নয়ারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২ দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৬০ শতাংশ ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়েছে। এখানকার ৭ শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Israel stands down alert after Iran missile launch

Israel hits nuclear sites, Iran strikes hospital as conflict escalates

21h ago