ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডুবে গেছে সরাইল-অরুয়াইল সড়ক
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-অরুয়াইল সড়ক। সড়কটির ৩টি পয়েন্ট পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে।
এলাকাবাসী জানায়, এই সড়ক দিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন পানির উপর দিয়ে চলাচল করছে। তবে যান চলাচল আগের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ৩টি পয়েন্টে সড়কের উপর দিয়ে প্রবল স্রোতে প্রবাহিত হচ্ছে। তীব্র স্রোতের কারণে উভয় পাশ দিয়ে ভাঙছে সড়ক। ভাঙন অব্যাহত থাকলে সড়কটি হাওরে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাওছার হোসেন বলেন, গত দু'দিন ধরে পানি বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে সরাইল উপজেলা সদরের সঙ্গে পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, তিতাস নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সরাইল উপজেলার চুন্টা গ্রামের মোড়ে সড়কটির একটি অংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চুন্টা ও লোপাড়া গ্রাম পেরিয়ে ভূইশ্বর বাজার থেকে কালিশিমুল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে হাঁটু সমান পানি। পানি উপচে সড়ক-হাওর একাকার হয়ে যাওয়ায় এখন সড়ক চেনা দায়।
স্থানীয় ভূইশ্বর গ্রামের বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, সড়কটির উত্তর অংশ জুড়ে হাওর এবং দক্ষিণাংশে বিভিন্ন গ্রামের অবস্থান। বন্যার পানির তোড়ে এখন সড়কের পাশের বাড়িঘরও পড়েছে ঝুঁকির মধ্যে। কারণ, নির্মাণের পর থেকে এই সড়কটি যান চলাচল ছাড়াও বর্ষার ভাঙন থেকে গ্রামগুলোকে রক্ষা করতো। তাছাড়া ভাটি অঞ্চলের মানুষদেরকে ডাকাতের কবল থেকেও রক্ষা করে এই সড়ক। কিন্তু বর্তমানে সড়কটির দুই পাশে থাকা পাকা ব্লক ঢেউয়ের তোড়ে সরে গিয়ে মাটি, এমনকি পিচ ঢালাই অংশও ভেঙে যাচ্ছে। এভাবে সড়কটি ভাঙতে থাকলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়াও এলাকার মানুষ বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডি'র সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী নিলুফা ইয়াছমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়কের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। আমরা এটি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছি। প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর কর্তৃপক্ষ বন্যা পরবর্তীতে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেবে।
হাওরবেষ্টিত অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের সঙ্গে সরাইল উপজেলা সদরের যোগাযোগ স্থাপন করতে ২০১০ সালে সড়কটি নির্মাণ করা হয়। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড় থেকে অরুয়াইল বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৩ কিলোমিটারেরও বেশি। নির্মাণের পর থেকে প্রতি বছর বর্ষা এলেই সড়কটি ভেঙে যায়। তবে এবারের বন্যায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হওয়ায় সড়কটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত স্থানীরা।
Comments