‘লা নিনার প্রভাবে বর্ষায় আরও বন্যার সম্ভাবনা’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চর যাত্রাপুর এলাকা। ছবিটি ১৯ জুন বিকেলে তোলা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

বাংলাদেশে চলমান বর্ষায় আরও বন্যা হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এ অবস্থায় তারা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমের বিষয়ে সরকারকে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চলতি বর্ষায় দেশে আরও বন্যার সম্ভাবনা আছে। পুরো বর্ষাকালজুড়ে  বন্যা হতে পারে।'

ঋতু অনুযায়ী বর্ষা মৌসুম সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলার কথা। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে।

ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগ ও উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, সামনের দিনগুলোতে দেশের মাঝামাঝি বন্যা দেখা দেবে। তবে, দ্রুত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

কানাডার ইউনিভার্সিটি অব সাসকাচোয়ানের পরিবেশ বিষয়ক গবেষক ড. মোস্তফা কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পূর্বাংশে লা নিনা অবস্থান করায় এই বর্ষায় আরও বন্যার সম্ভাবনা আছে।'

তিনি জানান, লা নিনা অবস্থান করলে সে বছর ভারতীয় উপমহাদেশে গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় এবং গড় বন্যা পরিস্থিতির তুলনায় বেশি এলাকা প্লাবিত হয়।

প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিকে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির স্বাভাবিক উষ্ণতা স্বাভাবিক উষ্ণতার চেয়ে কমে গেলে যে শীতল সমুদ্র স্রোত প্রবাহিত হলে তাকে লা নিনা বলে।

ড. কামালের মতে, ম্যাশেন-জুলিয়ান ওসিলেসনের সক্রিয়তার কারণে জুলাইয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে দেশে ব্যাপক বন্যার সম্ভাবনা আছে।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় দীর্ঘদিন (১-৩ মাস) আবহাওয়ার তারতম্য চলতে থাকলে তা ম্যাশেন-জুলিয়ান ওসিলেসনের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়।

বুয়েটের অধ্যাপক সাইফুল বলেন, 'সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি ইতোমধ্যে উন্নতি হলেও সামনের দিনগুলোতে দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে।'

তবে তা সিলেট বিভাগের মতো বিপর্যয় ঘটাবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আসন্ন বন্যা মোকাবিলায় সরকারকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং একই সময়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত।'

'বন্যাকবলিত এলাকার পানি কমার পর সড়ক মেরামত এবং দুর্যোগ পরবর্তী সমস্যা সমাধানে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত,' বলেন তিনি।

বাংলাদেশে বন্যার ঘটনা ও তীব্রতা বাড়ছে কি না, জানতে চাইলে ড. সাইফুল বলেন, 'বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।'
 

Comments

The Daily Star  | English

Tk 2,956 crore earmarked for Election Commission

Of this amount, Tk 2,727 crore has been allocated as revenue budget, while Tk 229 crore was allocated as development budget

1h ago