জুনের শেষে ঢাকার নিচু এলাকায় বন্যার শঙ্কা

ছবি: পলাশ খান/স্টার

যমুনা ও তিস্তা নদীতে পানিবৃদ্ধির কারণে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি বন্যার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলের চলমান বন্যা আগামী ৭ থেকে ১০ দিন স্থায়ী হতে পারে এবং আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

আগামী বুধবার থেকে সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইউনিভার্সিটি অফ সাসকাচোয়ানের গবেষক মোস্তফা কামাল আজ রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভালো খবর হলো সোমবার থেকে সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করবে এবং ৩ দিনের মধ্যে বন্যার পানি অনেকখানি কমে যাবে।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু দুঃসংবাদ হলো তিস্তা ও যমুনার পানি বাড়তে থাকবে।'

'অর্থাৎ, এই দুই নদীর পার্শ্ববর্তী  এলাকায় বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। বিশেষ করে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি আগামী ৭ দিনে আরও খারাপের দিকে যাবে,' বলেন ড. মোস্তফা কামাল।

'ইতোমধ্যে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ১ মিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে এবং এ মাসের শেষ নাগাদ ঢাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে পারে,' যোগ করেন তিনি।

যমুনার পানি এবং সিলেট বিভাগের পানি দেশের মধ্যাঞ্চলে পৌঁছালে ২৩ জুনের পর সেসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে জোরালো সম্ভাবনা প্রকাশ করেছেন এই বিশেষজ্ঞ।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) আজকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

এছাড়া, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারতের পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসাম, মেঘালয় এবং হিমালয়ের নিচের দিকে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। একই সময়ে টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

এফএফডব্লিউসির নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি মাঝারি বন্যায় পরিণত হবে এবং এটি ৭ দিনের মধ্যে কমতে শুরু করবে।

তিনি বলেন, 'সিলেট অঞ্চলে এবং পরে উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে। এটি দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় পরিণত হবে না।'

গত বছরের আগস্টে ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে নিয়মিতভাবে ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। সে বছর বন্যার পানি ৪০ দিনের বেশি স্থায়ী হয়েছিল। ২০২০ সালে দ্বিতীয় ভয়াবহ বন্যা হয়।

২০১৮ সালে বন্যার পানি ইতিহাসের রেকর্ড উচ্চতায় উঠে যায়। পরের বছর এই রেকর্ড ভেঙে যায়।

Comments

The Daily Star  | English

CSA getting scrapped

The interim government yesterday decided in principle to repeal the Cyber Security Act which has been used to curb press freedom and suppress political dissent.

5h ago