চীনের রকেটের ধ্বংসাবশেষ পড়েছে ভারত মহাসাগরে

গত ২৪ জুলাই ‘লং মার্চ ৫বি’ চীনের নির্মাণাধীন নতুন মহাশূন্য স্টেশনের গবেষণাগার মডিউল পৌঁছে দিতে রওনা হয়। ছবি: রয়টার্স
গত ২৪ জুলাই ‘লং মার্চ ৫বি’ চীনের নির্মাণাধীন নতুন মহাশূন্য স্টেশনের গবেষণাগার মডিউল পৌঁছে দিতে রওনা হয়। ছবি: রয়টার্স

চীন থেকে উৎক্ষেপিত রকেট মহাশূন্যে অভিযান শেষে ফেরার পথে ধ্বংস হলে এর অবশিষ্টাংশ ভারত মহাসাগরে পড়েছে।

গতকাল শনিবার এই ঘটনা ঘটে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বেইজিং রকেটের 'সুনির্দিষ্ট গতিপথ' সম্পর্কে কাউকে কোনো তথ্য দেয়নি।

মার্কিন মহাশূন্য কমান্ড গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, 'লং মার্চ ৫বি' রকেটটি গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে ভারত মহাসাগরে পৌঁছে। তবে কোথায় এর ধ্বংসাবশেষ পড়তে পারে এবং অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে চীনের কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, 'মহাশূন্যে অভিযান চালানো দেশগুলোকে কিছু প্রচলিত নীতি মেনে চলতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে রকেটের উৎক্ষেপণ ও ধ্বংসাবশেষ পড়ার সম্ভাব্য স্থান ও সময়সীমা সম্পর্কে সবাইকে আগে থেকে জানানো হয়।'

তার মতে, 'এ ধরনের তথ্য দেওয়ার বিষয়টি দেশগুলোর দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি জন-নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।'

মালয়েশিয়া থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্টে রকেটের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।

অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যারোস্পেস কর্প জানিয়েছে, সাড়ে ২২ টন ওজনের রকেটের মেইন-কোর স্টেজটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চীন বেপরোয়া কাজ করেছে।

বিশ্লেষকরা জানিয়েছিলেন, অভিযান শেষে রকেটটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবে এর আকারে এত বড় যে, বেশ কয়েকটি ছোট-বড় টুকরো ধ্বংস হবে না এবং এগুলো প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৭০ কিলোমিটার প্রস্থের এলাকা জুড়ে পতিত হবে।

ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। এ সপ্তাহের শুরুতে চীন জানিয়েছিল, তারা ধ্বংসাবশেষের দিকে লক্ষ্য রাখবে এবং এতে কোনো ঝুঁকি সৃষ্টি হবে না।

গত ২৪ জুলাই 'লং মার্চ ৫বি' চীনের নির্মাণাধীন নতুন মহাশূন্য স্টেশনের গবেষণাগার মডিউল পৌঁছে দিতে রওনা হয়। ২০২০ সালের পর এটি ছিল দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী এই রকেটের তৃতীয় ফ্লাইট।

২০২০ সালে প্রথম যাত্রা শেষে ফেরার পথে এই রকেটের অংশবিশেষ পশ্চিম আফ্রিকার দেশ আইভরি কোস্টে পড়েছিল। এতে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হননি।

বিশ্লেষকরা আরও জানান, মহাশূন্য অভিযান পরিচালনাকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ দেশ সাধারণত রকেটগুলোকে এমনভাবে তৈরি করে, যাতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর সেখানেই ধ্বংস হয়ে যায়। এর গতিপথও আগে থেকে নির্ধারণ করা থাকে।

১৯৭৯ সালে নাসার মহাশূন্য স্টেশন স্কাইল্যাব কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে অস্ট্রেলিয়ার ওপর পড়ে। এরপর থেকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

২০২১ সালেও চীন এই রকেটের দ্বিতীয় যাত্রার বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি। তখনো রকেটের ধ্বংসস্তূপ ভারত মহাসাগরে পড়েছিল এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

Comments

The Daily Star  | English

A floating mosaic of guavas, baskets and people

During the monsoon, Jhalakathi transforms into a floating paradise. Bhimruli guava market comes alive with boats carrying farmers, buyers, and tourists.

11h ago