মিয়ানমার সংকট নিরসনে চীনের ৩ প্রত্যাশা
মিয়ানমারের বাগান অঞ্চলে আজ সোমবার এক বৈঠকে দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন চীনের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং কম্বোডিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাক সোখোন জানান, তিনি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনসের (আসিয়ান) বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে মিয়ানমারে এসেছেন।
প্রাক সোখোন আসিয়ানের চেয়ারম্যান পদ গ্রহণের পর মিয়ানমার সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধানে কম্বোডিয়ার সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন ওয়াং ই।
বৈঠকে এ বিষয়ে চীনের ৩টি প্রত্যাশার কথা বিস্তারিত আলোচনা করেন ওয়াং ই।
প্রথমত, চীন ও আসিয়ান সম্মিলিত উদ্যোগে মিয়ানমারকে সংবিধান ও আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার পথে নেওয়ার চেষ্টা চালাবে। একইসঙ্গে মিয়ানমারের সব রাজনৈতিক দলকে দেশ ও জাতির বৃহত্তর মঙ্গলের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে উৎসাহিত করবে। চীন ও আসিয়ানের প্রত্যাশা মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলগুলো যুক্তিসঙ্গত এবং বাস্তবসম্মত প্রচেষ্টা নেবে, একে অপরের চাওয়া-পাওয়াগুলো বুঝবে, সে অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করবে এবং সব দলের যৌক্তিক দাবিগুলোকে আমলে নেবে, যাতে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে এবং যত দ্রুত সম্ভব শান্তিপূর্ণ পরিবেশের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়।
দ্বিতীয়ত, চীন আশা করছে তারা আসিয়ানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মিয়ানমারকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া আবারো চালুর জন্য উৎসাহিত করতে পারবে। ফলে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরে আসবে এবং একটি জাতি হিসেবে মিয়ানমারের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও বর্তমান জাতীয় পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে রাজনৈতিক উন্নয়নের একটি সুষ্ঠু প্রক্রিয়া চালু হবে।
তৃতীয়ত, চীন আশা করছে আসিয়ান তার মৌলিক নীতিমালা ও ঐতিহ্য বজায় রাখবে। 'আসিয়ান ওয়ে' নামে পরিচিত নীতি অনুযায়ী, সংস্থাটি কোনো সদস্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। চীনের প্রত্যাশা, আসিয়ান ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে উদ্যোগ নেবে, নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে নজর দেবে এবং লক্ষ্য থেকে নজর সরাতে পারে এরকম সকল বাধা-বিপত্তি দূর করবে, ধৈর্যের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে এবং গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় আসিয়ানের 'ফাইভ পয়েন্ট কনসেনসাস' বাস্তবায়ন করবে। সার্বিকভাবে আসিয়ানের একাত্মবোধ ও নেতৃস্থানীয় ভূমিকা সুরক্ষিত থাকবে, এটাই চীনের প্রত্যাশা।
Comments