‘আশ্রয়কেন্দ্রে ঈদ, ইতা কল্পনাও করিনি’

আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবারের জন্য রান্না করছেন একজন। ছবি: মিন্ট দেশোয়ারা

'জীবনে কোনোদিন আশ্রয়কেন্দ্রে ঈদ করছি না। ইবার বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঈদ করতে হবে। ইতা কোনো সময় কল্পনাও করিনি।'

এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা বলছিলেন মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার হাওড় পাড়ের বাসিন্দা খেলারুন বেগম। তিনি গত ১৭ জুন থেকে ছিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন।

তিনি বলেন, 'যতো ভালা খানি (খাবার) হউক, তাতে তৃপ্তি পাইতাম না। ঈদর আনন্দ নায় বরং খারাপ লাগবো বেশি। জীবনে কোনোদিন আশ্রয় কেন্দ্রে ঈদ করছি না। ইবার বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঈদ করতে হবে।'

আশ্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ সুজানগর গ্রামের নুর উদ্দিন বলেন, 'ইতোমধ্যে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন। বর্তমানে প্রায় ১৪০টি পরিবার এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। বন্যার পানি না কমায় ঈদের আগে তাদের বাড়ি ফেরা অনেকটা অনিশ্চিত। অন্যদিকে বৃষ্টি হলেই পানি বাড়ছে।'

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ভোলারকান্দি গ্রামের পিয়ারুন বেগম বলেন, 'ঈদ আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে বন্যার পানি। এবারই প্রথম আমাদের ঈদ কাটবে এই আশ্রয়কেন্দ্রে।'

কুলাউড়া পৌরসভার বিএইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মনসুর গ্রামের হালিমা খাতুন বলেন, 'এবার ঈদ কাটবে আশ্রয়কেন্দ্রে। ইতা কোনো সময় কল্পানও করিনি। সারাদিন কাটবে আশ্রয়কেন্দ্রের বদ্ধ ঘরে।'

কুলাউড় উপজেলার শ্রীপুর কামিল মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্রের আব্দুল কাইয়ুম, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোজিনা, সুলতানা জানান- আমরা বাড়িতে ফিরতে চাই। কিন্তু উপায় নাই। আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করে দিন।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, শুদ্ধাচার পুরস্কার হিসেবে প্রাপ্ত সমুদয় আর্থিক পুরস্কার (এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ) মৌলভীবাজারের বন্যা কবলিতদের সাহায্যার্থে প্রদান করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। সেই টাকা দিয়ে বন্যায় বিপর্যস্ত কুলাউড়া, জুড়ি এবং বড়লেখা উপজেলার বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। যেন ঈদের দিন ভালো কিছু খেতে পারে।'

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ আপডেট তথ্য অনুযায়ী, জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো ১৩ হাজার ১০৬ মানুষ আছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Divisions widen over July Charter’s status, implementation

Major political parties are divided over the July Charter’s implementation timeline

10h ago