ভেসে গেছে ১৪০ কোটি টাকার মাছ: মৎস্য অধিদপ্তর

আজ সোমবার সুরমা নদীর শাহজালাল ৩ নং সেতুর চিত্র। ছবি: মওদুদ আহম্মেদ সুজন/স্টার

মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, চলমান বন্যায় সিলেটে মাছচাষে ১৪০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জের খামারিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রায় ৩২ হাজার ৮০২ জন খামারি ৫ হাজার ২৫৮ হেক্টর জমিতে কার্পজাতীয় মাছের চাষ করছিলেন। দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মৌসুমি বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় ও আসামের ঢাল থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় তাদের আর্থিক লাভের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।

সিলেটে মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. মোতালেব হোসেন বলেন, 'এটি একটি প্রাথমিক প্রাক্কলন। খামারিদের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে। কারণ সুনামগঞ্জের প্রায় সব খামারই পানিতে ভেসে গেছে।'

স্থানীয় খামারিরা এমন এক সময় এ ধরনের ক্ষতির শিকার হলেন, যখন এ অঞ্চলে মাছ চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছিল। দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে এবং সঙ্গে বেড়েছে প্রোটিনের চাহিদা। ফলে অনেকেই আশা করছিলেন এই বর্ধিত চাহিদার সুযোগে বাড়তি লাভ করতে পারবেন।

২০১৯-২০ অর্থবছরে চাষের মাছে ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। সেই অর্থবছরের মত ৪৫ লাখ টন উৎপাদিত মাছের ৫৭ শতাংশই এসেছে কালচার্ড ফিস (চাষের মাছ) থেকে। যেটি প্রোটিনের সাশ্রয়ী উৎস হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর  এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সে বছর মাছ চাষের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম উৎপাদক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল।

এক দশক আগে, কালচার্ড মাছের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার টন। মৎস্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি মোট উৎপাদনের প্রায় ৪৭ শতাংশ।

সিলেটে দেশের কালচার্ড মাছের মোট উৎপাদনের ৩ শতাংশ উৎপাদিত হয়।

কর্মকর্তারা জানান, উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন কার্যক্রম মূলত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সীমাবদ্ধ। সেখানে খামারিরা মাগুরমাছ ও মিঠাপানির চিংড়ি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সহকারী পরিচালক মোতালেব হোসেন জানান, এ অঞ্চলে কার্পের পাশাপাশি তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশ মাছের চাষ ইতোমধ্যে প্রচলিত আছে।

কর্মকর্তারা জানান, বন্যার কারণে খামারে সৃষ্ট ক্ষতি একইসঙ্গে খামারি ও ভোক্তা উভয়কেই প্রভাবিত করবে।

মোতালেব হোসেনের মতে, খামারিদের উচিৎ বন্যার হাত থেকে তাদের মৎস্য খামারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য জাল ব্যবহার করা।

শীর্ষ পোল্ট্রি ও ফিড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্যারাগন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম. মশিউর রহমান জানান, সিলেটে তাদের ২টি হ্যাচারি ও ২টি মাছের খামার আছে।

'আমরা আগে বন্যার পানির প্রবাহকে বাঁধা দেওয়ার জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট বেশি উঁচু একটি বাঁধ তৈরি করেছিলাম। পানির উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা জালগুলোর উচ্চতাও বাড়িয়েছি', যোগ করেন তিনি।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

4h ago