গণতন্ত্র ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষতা সম্ভব নয়: আকবর আলি খান

বাংলাদেশের বর্তমান শাসন ব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করে দেশে গণতন্ত্র গড়ার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন ড. আকবর আলি খান। ছবি: স্টার

বাংলাদেশের বর্তমান শাসন ব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করে দেশে গণতন্ত্র গড়ার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান।

তিনি বলেন, 'যে দেশের জনগণ সরকারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, সেটি হলো গণতন্ত্র। ভোট হোক আর যাই হোক, যে দেশের সরকার জনগণের নিয়ন্ত্রণে নেই সেটিকে প্রকৃত নির্বাচন বলা চলে না। এবং এদিক থেকে দেখতে গেলে আমাদের দেশে গণতন্ত্র গড়ার প্রয়োজন আছে।'

শনিবার সকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

স্মরণ সভার আয়োজন করে এমাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ সেন্টার।

আকবর আলি খান অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের বিশেষ কৃতিত্বের কথা উল্লেখ করে তাকে স্মরণ করেন।

'আমি মনে করি, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় উপাদান হলো গণতন্ত্র। আমরা যদি দেশের ইতিহাস পড়ি, তাহলে দেখতে পাবো যে, অষ্টম শতাব্দীতে প্রথম বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হয়। এদেশের মানুষ সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং রাষ্ট্রের চার স্তম্ভের মধ্যে গণতন্ত্রই হলো এদেশের রাজনীতির মূল স্তম্ভ। কারণ হলো, এদেশের আত্মপ্রকাশ হয়েছে গণতন্ত্রের মাধ্যমে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এদেশ স্বাধীন করেছি এবং জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটেছে, যোগ করেন তিনি।

আকবর আলি খান বলেন, 'গণতন্ত্র ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষতা সম্ভব নয়, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং সবশেষে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে গণতন্ত্রের মাধ্যমে। ক্ষমতার কেন্দ্রকরণ গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত। যে দেশের জনগণ সরকারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে সেটি হলো গণতন্ত্র। যে দেশের সরকার জনগণের নিয়ন্ত্রণে নাই, ভোট হোক আর যাই হোক, সেটিকে প্রকৃত নির্বাচন বলা চলে না এবং এদিক থেকে দেখতে গেলে আমাদের দেশে গণতন্ত্র গড়ার প্রয়োজন আছে। গণতন্ত্র গড়তে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমদের লেখনীর কাছে।'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে এবং কবি আবদুল হাই শিকদারের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও এমাজ উদ্দীন আহমদের মেয়ে দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক মো. শাহ আলম।

Comments