‘ইসি দেখাল, একজন সংসদ সদস্যকে এলাকার বাইরে পাঠানোর ক্ষমতা নেই তাদের’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই নির্বাচন কমিশন তার প্রথম ভাগেই দেখাল যে- তাদের ক্ষমতা নেই একজন সংসদ সদস্যকে বিধি অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার বাইরে পাঠানোর। এতে নির্বাচনী বিধি প্রণয়নে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে, সেই কমিশন কীভাবে ভবিষ্যতে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই নির্বাচন কমিশন তার প্রথম ভাগেই দেখাল যে- তাদের ক্ষমতা নেই একজন সংসদ সদস্যকে বিধি অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার বাইরে পাঠানোর। এতে নির্বাচনী বিধি প্রণয়নে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে, সেই কমিশন কীভাবে ভবিষ্যতে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী জেলা মহিলা দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আগে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'এজন্য এই নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আমরা মোটেই আগ্রহী ছিলাম না। কারণ নির্বাচন কমিশনে যেই আসুক তারা কিছুই করতে পারবেন না, যদি সরকার পরিবর্তন না হয়। নির্বাচনের সময় যদি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে কোনো নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। তার প্রমাণ হয়ে গেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে।'

পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, 'পদ্মা সেতুর প্রাথমিক ফিজিবিলিটি রিপোর্ট ২০০৩-২০০৪ সালের দিকে বেগম খালেদা জিয়ার আমলেই শুরু হয়। সেসময় জাপান, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এই আলোচনার প্রেক্ষিতেই ফিজিবিলিটি রিপোর্ট তৈরি হয়। সেই রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছিল।'

তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে আমাদের কথা নয়। আমাদের ইস্যুটা হচ্ছে পদ্মা সেতুর জন্য যে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা। সে জায়গায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এই ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়, কীভাবে ব্যয় হলো? পৃথিবীর কোথাও কোনো সেতুর নির্মাণ ব্যয় এত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই, নির্মাণ কাজের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদেরও জানা নেই।'

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে বিএনপি যাবে কিনা সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, 'এ প্রশ্নটি ওবায়দুল কাদের সাহেবকে করলে ভালো হতো। কারণ তার আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যদি পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে টুপুস করে ফেলে দেওয়া যায় তাহলে ঠিক হয়। যেখানে একজন বিরোধীদলীয় নেত্রীকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয় সেই হুমকির মুখে তিনি কীভাবে যাবেন। তাই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনীতে তিনি যাবেন এটি মনে করার কোনো কারণ নেই।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশের যে উন্নয়ন হচ্ছে তা কার জন্যে। এটা কী জনগণের জন্যে নাকি যারা এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্ল্যানিং করছেন তাদের জন্যে। তাদের (সরকারের) মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে টাকা চুরি, লুটপাট ও অর্থপাচার করা। উন্নয়ন বলতে তারা এই মেগা প্রকল্পকেই বুঝাচ্ছেন। কিন্তু, বাংলাদেশের শতকরা ৪২ জন মানুষ যে দারিদ্রসীমার নিচে বাস করছেন। এই মানুষগুলো যে এখনো দু'বেলা ঠিক মতো খেতে পারেন না।'

'এছাড়াও অস্বাভাবিকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মধ্যবিত্ত মানুষ দু'বেলা ভালো মন্দ খেতে ও বাচ্চা শিশুদের জন্য প্রোটিন জোগাড় করবে সেটিও করতে পারছেন না। তাহলে উন্নয়ন কীভাবে হলো?'

Comments