রুশ হামলায় সেভেরোদনেৎস্কের পর লিসিচানস্কও পতনের মুখে

বেশ কয়েক সপ্তাহ প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুললেও পূর্ব ইউক্রেনের সেভেরোদনেৎস্ক শহরের দখল হারিয়েছে কিয়েভ। গত শনিবার এ শহরের পুরোপুরি দখল নিয়েছে রাশিয়া। এ শহরের দখল নিশ্চিত হওয়ার পর মস্কো মনোযোগ দিয়েছে এর ‘যমজ শহর’ হিসেবে পরিচিত লিসিচানস্কের দিকে।
আসন্ন হামলার আশঙ্কায় থমথম করছে লিসিচানস্ক
আসন্ন হামলার আশঙ্কায় থমথম করছে লিসিচানস্ক। ছবি: এএফপি

বেশ কয়েক সপ্তাহ প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুললেও পূর্ব ইউক্রেনের সেভেরোদনেৎস্ক শহরের দখল হারিয়েছে কিয়েভ। গত শনিবার এ শহরের পুরোপুরি দখল নিয়েছে রাশিয়া। এ শহরের দখল নিশ্চিত হওয়ার পর মস্কো মনোযোগ দিয়েছে এর 'যমজ শহর' হিসেবে পরিচিত লিসিচানস্কের দিকে।

আজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

সিভেরস্কি দোনেৎস নদীর তীরে অবস্থিত এ শহরে ধারাবাহিক রুশ কামান হামলায় আজ মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

পূর্বের লুহানস্ক প্রদেশে এটাই ইউক্রেনের দখলে থাকা সর্বশেষ বড় শহর। বিশ্লেষকদের মতে, লিসিচানস্ক এখন ক্রেমলিনের মূল লক্ষ্য। এ শহর দখল নিতে পারলেই পুরো লুহানস্কের দখল চলে আসবে মস্কোর কাছে।

লুহানস্কের গভর্নর সের্হেই গাইদাই আজ জানান, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সোমবার লিসিচানস্কে ৮ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, শহরটির দখল এখনো ইউক্রেনের বাহিনীর হাতে, তবে খুব শিগগির এর পতন হতে পারে।

গাইদাই এর মতে, রুশ বাহিনী এ যুদ্ধে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ঢালছে। 

রয়টার্সের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, তারা (রাশিয়া) এ শহরের দখল নেওয়ার জন্য খুবই আগ্রহী এবং শুধুমাত্র এ কারণে তারা রিজার্ভ থেকেও অনেক সেনা ও সামরিক উপকরণ এখানে পাঠাচ্ছে।

'আমরা শুধু একটি শহর রক্ষার জন্য পুরো সেনাবাহিনী হারাতে চাই না', যোগ করেন তিনি।

লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত রোদিয়ান মিরোশনিক জানান, রুশ সেনা এবং তাদের লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের মিত্ররা পশ্চিমের লিসিচানস্কের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শহরের স্টেডিয়ামের আশেপাশের সড়কগুলোতে লড়াই চলছে।

এছাড়াও, শহরের চারপাশের বেশ কিছু গ্রামেও যুদ্ধ চলছিল। রুশ ও মিত্রবাহিনী লিসিচানস্কের তেল পরিশোধনাগারে প্রবেশ করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বার্তায় রাষ্ট্রদূত মিরোশনিক জানান, এই তেল পরিশোধনাগারেই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী অবস্থান নিয়েছে।

এর আগে একইভাবে ইউক্রেনের বাহিনী সেভেরোদনেৎস্কে একটি রাসায়নিক কারখানায় এবং মারিউপোলে একটি ইস্পাত কারখানায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সোভিয়েত আমলে নির্মিত এসব স্থাপনা গঠনগত দিক দিয়ে বেশ মজবুত ও দুর্ভেদ্য। 

ইউক্রেনের অন্যতম বৃহৎ নদী সিভেরস্কি দোনেৎসের তীরে অবস্থিত লিসিচানস্ক হতে যাচ্ছে রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য
ইউক্রেনের অন্যতম বৃহৎ নদী সিভেরস্কি দোনেৎসের তীরে অবস্থিত লিসিচানস্ক হতে যাচ্ছে রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য। ছবি: ব্রিটানিকা

রুশ বাহিনীর লিসিচান্সকে প্রবেশের বিষয়টি রয়টার্স যাচাই করতে পারেনি।

এছাড়াও, সোমবার রাশিয়া উত্তর-পূর্ব দিকের শহর খারকিভে বোমাবর্ষণ করেছে। খারকিভের প্রাদেশিক গভর্নর জানান, বোমা হামলায় কিছু অ্যাপার্টমেন্ট দালান ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গভর্নর দাবি করেন, বোমাবর্ষণে ৫ ব্যক্তি নিহ৩ ও ২২ জন আহত হন।

নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল, জানান তিনি।

কিছু বিশ্লেষকের মতে, লুহানস্ক অঞ্চলের পূর্ণ দখল নিতে পারলে সেটি রাশিয়ার জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে বিবেচিত হবে, এমন কী, এটি যুদ্ধ বন্ধেরও পথ তৈরি করে দিতে পারে। তবে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও দেশগুলোর ভাষ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন।

Comments