ইউক্রেনের শস্য বহনকারী জাহাজ ইস্তাম্বুল পৌঁছেছে
মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে সাক্ষরিত বিশেষ চুক্তির আওতায় ইউক্রেন থেকে শস্যবাহী একটি জাহাজ আজ তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে এসে পৌঁছেছে। পরিদর্শকরা জাহাজে প্রবেশ করে তাদের পরিদর্শন কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
আজ বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
শস্যের চালানটি গত মাসে সাক্ষরিত চুক্তির শর্ত মেনে চলছে কী না, তা রাশিয়া, ইউক্রেন, তুরস্ক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পরীক্ষা করবেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর পর থেকে দেশটির শস্য রপ্তানি কার্যত বন্ধ রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম প্রধান খাদ্য সরবরাহকারী দেশ ইউক্রেন থেকে কৃষি পণ্যের সরবরাহ থেমে যাওয়ায় সারা বিশ্বে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিয়নের পতাকাবাহী জাহাজ রাজোনি ২৬ হাজার ৫২৭ টন ভুট্টা বহন করছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাহাজটি ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী বন্দর ওডেসা থেকে সোমবার রওনা হয়। এর চূড়ান্ত গন্তব্য লেবাননের ত্রিপোলি শহর।
বুধবার জাহাজটি বসফরাস প্রণালীতে নোঙ্গর করে। এই প্রণালী কৃষ্ণ সাগরকে সি অব মারমারা ও এইজিয়ান সমুদ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
পরিদর্শকরা ২টি নৌকায় করে জাহাজে প্রবেশ করেন। তাদের কারও কারও পরনে সাদা হেলমেট ছিল। তুরস্কের কোস্ট গার্ড বাহিনী তাদেরকে প্রহরা দিয়ে নিয়ে যায়। তুরস্কের গণমাধ্যমে জানিয়েছে, প্রায় ২০ জন পরিদর্শক জাহাজের ভেতরে প্রবেশ করেছেন।
পরিদর্শনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জাহাজে যেনো শুধু শস্য, সার অথবা খাদ্য সামগ্রী থাকে। এছাড়াও, আগ্নেয়াস্ত্র না থাকার বিষয়টিও তারা নিশ্চিত করবেন।
আগামী দিনগুলোতে ইউক্রেন থেকে এরকম আরও জাহাজ আসার কথা রয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে, যে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট ধীরে ধীরে কমে আসবে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফানি দুজারিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩টি ইউক্রেনীয় বন্দরে সাক্ষরিত চুক্তি ও মালপত্রসহ ২৭টি জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে।
যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনে প্রায় ২০ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য আটকে রয়েছে।
ইউক্রেন থেকে খাদ্যসামগ্রীর চালান বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সারা বিশ্বের খাবারের দাম বেড়েছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্ষুধা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
তবে ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক খাদ্য নীতিমালা গবেষণা সংস্থার বিশেষজ্ঞ ডেভিড ল্যাবোর্ডে জানান, ইউক্রেনে আটকে থাকা শস্যের বেশিরভাগই গবাদি পশুর খাবার। ল্যাবোর্ডের মতে, মাত্র ৬০ লাখ টন গম আছে সেখানে, যার অর্ধেক মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত।
'রাজোনিতে যা আছে, তা শুধুমাত্র মোরগ-মুরগীর খাবার', যোগ করেন তিনি।
Comments