আমিরাতে ‘এশিয়া কাপ’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রবাসীরা, রয়েছে শঙ্কাও

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইসিসি টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপ। এতে বাংলাদেশসহ মোট ৬টি দল এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে। আর এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা এখন দিন গুনছেন মাঠে গিয়ে লাল সবুজের পতাকা উড়ানোর৷ তবে তাপমাত্রা নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও আছে।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আবুধাবি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের খেলা উপভোগ করেছেন প্রবাসীরা। ছবি: সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইসিসি টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপ। এতে বাংলাদেশসহ মোট ৬টি দল এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে। আর এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা এখন দিন গুনছেন মাঠে গিয়ে লাল সবুজের পতাকা উড়ানোর৷ তবে তাপমাত্রা নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও আছে।

গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ পর্বে আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আবুধাবি শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলেছিল বাংলাদেশ। 

সে সময় তিনটি মাঠেই প্রতিটি খেলায় লাল-সবুজের টানে কয়েক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি ছুটে গিয়েছিলেন, উৎসবে মেতেছিলেন। 

এবারও এশিয়া কাপকে নিয়ে তেমন আমেজেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এশিয়া কাপ ২০২২-এর সময়সূচি ঘোষণার পর থেকেই আমিরাতজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে ৷ মাঠে গিয়ে টাইগারদের উৎসাহ দিতে দল বেঁধে মাঠে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমী প্রবাসীরা। কেউ কেউ সংগ্রহ করছেন পতাকা, বাহারি সাজসজ্জা।

দুবাইপ্রবাসী বাংলাদেশি মুহাম্মদ রুবেল বলেন, 'যখনই বাংলাদেশ দল আরব আমিরাতে ক্রিকেট খেলতে আসে প্রবাসীরা মাঠে গিয়ে তাদের উৎসাহ দেন। এশিয়া কাপ নিয়ে ও আমাদের আগ্রহের শেষ নেই। প্রবাসের মাঠে বসেই সাকিব, মুশফিক, মোস্তাফিজ, বিজয়, রিয়াদের দেখতে পারবো, প্রবাসীদের জন্য এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কী হতে পারে।'

আজমানে বসবাসরত প্রবাসী মিজান সাঈদ বলেন, 'আমিরাতে বিশ্বকাপের রেশ যেতে না যেতে এশিয়া কাপ। অহংকারের টাইগার বাহিনীকে সাহস যোগাতে আমরা প্রস্তুত।'

তবে গত বছর হতাশা দিয়েই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ করেছিল বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভের সবগুলো ম্যাচই পরাজিত হয়ে দেশে ফিরেছিল টাইগারবাহিনী।

প্রসঙ্গ টেনে শারজাহপ্রবাসী মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, 'ঘরের কাছেই স্টেডিয়াম। লাল-সবুজের টানে অনেক উচ্ছাস, আবেগ, উদ্দীপনা নিয়ে মাঠে গিয়েছিলাম। কিন্তু চোখের পানি নিয়ে ফিরতে হয়েছিল। আশা করি এবার বাংলার টাইগাররা আমাদের নিরাশ করবে না।'

ওয়ানডে সংস্করণে হওয়া এশিয়া কাপের সর্বশেষ চার আসরের তিনটিতেই ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে সর্বশেষ এশিয়া কাপ হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতেই, বাংলাদেশ সেটিতে খেলেছিল ফাইনালে।

সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে কারণে এবার টি-টোয়েন্টি সংস্করণের টুর্নামেন্ট প্রত্যাশার সীমা বেশ নিচে রেখেই আমিরাত সফর শুরু করতে যাচ্ছে লাল সবুজের দল। তাই প্রবাসীরা আশা কতটুকু উপভোগ করতে পারবেন তাও ভাবনার বিষয়।

আবুধাবি প্রবাসী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম সোহাগ বলেন, 'বাংলাদেশ আর ক্রিকেট আমাদের আবেগ ও ভালোবাসা। তাই জয়-পরাজয়ের চেয়ে প্রবাসের মাঠে লাল-সবুজের উপস্থিতি আমাদের আনন্দ দেয়, গর্বিত করে। তারপরও গত বিশ্বকাপের মতো হতাশা আমাদের কাম্য নয়। আমাদের চাওয়া থাকবে অন্তত আগের এশিয়া কাপগুলোর মতোই ভাল খেলবে।'

এদিকে আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, খেলা চলাকালীন আমিরাতের সন্ধ্যার তাপমাত্রা গড়ে ৪০ ডিগ্রি থাকবে। 

গতবছর বিশ্বকাপ ছিল অক্টোবর-নভেম্বরে, তখন তাপমাত্রা গড়ে ৩৩/৩৪ ডিগ্রী ছিল। তাই এবার প্রচণ্ড গরমে মাঠে গিয়ে খেলা দেখার ব্যাপারে অনেকেই আশঙ্কা জানান।

আমিরাতে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান জনি বলেন, 'সাধারণত বেশি তাপমাত্রায় কর্মস্থল ছাড়া কেউ খুব একটা ঘর থেকে বের হন না। যদিও অনেকের মাঝে এশিয়া কাপ নিয়ে উদ্দীপনা দেখছি শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপের মতো মাঠ ভরবে কিনা সে সংশয় থেকে যায়।'

'মরুর জীবনে অভ্যস্ত প্রবাসীদের কাছে যখন গরম সত্যের সীমা ছাড়ায়, সেখানে আমাদের খেলোয়াড়দের নিয়ে শঙ্কায় থাকাটা স্বাভাবিক। তাদের কিছুটা সমস্যা হতে পারে বলে আমাদের ধারণা। তবে আমরা আশাবাদী, তারা উতরে যেতে পারবেন',যোগ করেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এশিয়া কাপের আসর বসছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এবারের আসর মাঠে গড়াচ্ছে ২৭ আগস্ট এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১১ সেপ্টেম্বর। ২৭ আগস্ট প্রথম দিনই মাঠে নামছে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। সাকিবের নেতৃত্বে ৩০ আগস্ট শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬ টায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ৷

 

লেখক: আমিরাতপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago