জার্মানির মৎস্য মেলায় বাংলাদেশ

জার্মানিতে আন্তর্জাতিক মৎস্য মেলায় বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারের জার্মান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তারা । ছবি: সংগৃহীত

রপ্তানিমুখী মৎস্য সম্পদকে সবার কাছে তুলে ধরতে প্রথমবারের মতো জার্মানির একটি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ।

দেশটির ব্রেমেন শহরের আয়োজিত ৩দিনের আন্তর্জাতিক মৎস্য মেলায় বিশ্বের ২৯টি দেশ থেকে ৩০৩ প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।

সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া এবং বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে  শীর্ষস্থানীয় ৬টি হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নেয়।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- এসিআই এগ্রোলিংক লিমিটেড, ডিপ সি ফিশ লিমিটেড, এমইউ সি ফুড লিমিটেড, ক্রিমসন রোসেলা সি ফুড লিমিটেড, এপেক্স সি ফুড লিমিটেড ও কাতলিয়া এ সি ফুড লিমিটেড।

৪ সেপ্টেম্বর মেলার প্রথম দিনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

এ সময় তিনি বলেন, 'আমাদের রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ ধরনের অংশগ্রহণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত পানি ধারণ উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং বিশ্ব জলাশয় উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।'

'জার্মানি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রপ্তানির গন্তব্যস্থল। আমরা আশা করছি আগামী বছরে জার্মানিতে বাংলাদেশি টাইগার চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ রপ্তানি বাড়বে,' আরও বলেন তিনি।

মেলার দ্বিতীয় দিন সলিডারিটাট নেটওয়ার্ক এশিয়া ও বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মেলার বিজনেস লাউঞ্জে আয়োজিত সেমিনারে জার্মান উপমন্ত্রী কাই সুরেনবারগসহ ইউরোপিয়ান ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র এলাকার মৎস্য খাতের সম্ভাবনার তুলে ধরে এ খাতে জার্মানিসহ ইউরোপের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সাইফুল ইসলাম জানান, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে সারা বিশ্বের প্রায় ৫৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হয়েছে, যেখানে শুধু জার্মানিতে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি হয়েছে।

'আমরা আশা করছি, আগামী বছরে জার্মানিতে মৎস্য রপ্তানি ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে,' কাউন্সেলর যোগ করেন।

মেলায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক সমিতির (বিএফএফইএ) পরিচালক শ্যামল দাস বলেন, এই মেলায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেছেন, যা ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, এই মেলায় আমরা জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পেয়েছি।

বাংলাদেশের রপ্তানিকারক ডিপ সি ফিশার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম চৌধুরী বলেন, আমরা এই মেলায় অংশগ্রহণ করছি জার্মানির বাজারে বাংলাদেশি মৎস্য সম্পদকে তুলে ধরতে।

সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটেছে। বাংলাদেশের মৎস্য পণ্য বিশেষ করে বিটি চিংড়িকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরার জন্য যৌথভাবে কাজ করছি।

লেখক: জার্মান প্রবাসী সাংবাদিক

 

Comments