শিক্ষা শেষে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ভিসা দেবে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অস্ট্রেলিয়ার অপরিকল্পিত অভিবাসন নীতির কারণে একজন স্বল্প দক্ষ, অস্থায়ী অভিবাসীর জন্য এখানে আসা তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু উচ্চ দক্ষ, স্থায়ী অভিবাসীর জন্য এখানে আসা এবং থাকা কঠিন, ধীরগতির এবং আকর্ষণীয় নয়। আমরা সিস্টেমটিকে পেছনের দিকে নিয়ে গেছি।
শিক্ষা শেষে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ভিসা দেবে অস্ট্রেলিয়া
ছবি: সংগৃহীত

আজ বুধবার 'অস্ট্রেলিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল রিভিউ-এর কর্মশক্তি শীর্ষক সম্মেলনের এক বক্তৃতায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নিল অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসী ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। 

কর্মীর ঘাটতি পূরণ করতে মেধাবী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা সহজ করে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, 'এটি জটিল, ব্যয়বহুল এবং ধীরগতির। বিগত জোট সরকার যে পদ্ধতি রেখে গেছে তা ব্যবসার জন্য, অভিবাসীদের জন্য এবং আমাদের জনসংখ্যার জন্য সুফল বয়ে আনছে না।'

তিনি জোট সরকারের অধীনে অস্থায়ী অভিবাসনের দ্রুত সম্প্রসারণের সমালোচনা করেছিলেন। তখন দক্ষ স্থায়ী অভিবাসন গ্রহণ তুলনামূলকভাবে স্থবির ছিল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অস্ট্রেলিয়ার অপরিকল্পিত অভিবাসন নীতির কারণে একজন স্বল্প দক্ষ, অস্থায়ী অভিবাসীর জন্য এখানে আসা তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু উচ্চ দক্ষ, স্থায়ী অভিবাসীর জন্য এখানে আসা এবং থাকা কঠিন, ধীরগতির এবং আকর্ষণীয় নয়। আমরা সিস্টেমটিকে পেছনের দিকে নিয়ে গেছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও'নিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের 'অব্যবহৃত লভ্যাংশ' হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, স্নাতক হওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থীকে  কার্যকরভাবে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।'

তার দেওয়া তথ্যমতে, যে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়ে গেছে তারা তাদের যোগ্যতার চেয়ে নিম্ন দক্ষ চাকরিতে কাজ করেছেন। এর কারণ অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তর কর্মীবাহিনীতে তাদের একীভূত করার ব্যবস্থার অভাব ছিল।

তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অনেকেই পড়া লেখা শেষ করার পরও চিরকাল নানা ধরনের ভিসা নিয়ে অস্থায়ীভাবে এদেশে অদক্ষ কর্মী হিসেবে থেকে যায়। এটি তাদের জন্য ভালো নয়, দেশের জন্যও ভালো নয়।'

ও'নিল বলেন, 'আমাদের সরকার এমন নীতির অবসান ঘটাতে চাইছে যা স্থায়ীভাবে বাস করা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী অবস্থার সৃষ্টি করে।'

'এতে অস্ট্রেলিয়ায় শিকড় স্থাপন করতে, তাদের শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে বা ব্যবসা শুরু করার জন্য ঋণ পেতে অক্ষম রাখে।' তিনি যোগ করেন। 

গত সেপ্টেম্বরে নিয়োগকর্তারা এবং ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা সরকারের কাছে একটি বৃহত্তর স্থায়ী কর্মসূচির জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। তখন অভিযোগ করেছিলেন যে ভিসার জটিলতার কারনে তারা অন্যান্য দেশের প্রতিভা হারাচ্ছেন।

সরকার অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন ব্যবস্থার একটি বিস্তৃত পর্যালোচনাও করেছে, যা এই বছরের শেষের দিকে প্রকাশিত হবে। এটি স্থায়ী অভিবাসনের 'আদর্শ আকার ও গঠন' খতিয়ে দেখবে। আশা করা হচ্ছে, নীতিগত পরিবর্তনগুলো দক্ষ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে অস্ট্রেলিয়াকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। 

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

 

Comments