প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার

প্যারিসের সেন্ট ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্নার্ড মারিস স্কয়ারে গত রোববার শহীদ মিনার উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

৫২'র ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার উদ্বোধন করা হয়েছে। 

প্যারিসের সেন্ট ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্নার্ড মারিস স্কয়ারে গত রোববার সকাল ১১টায় শহীদ মিনার উদ্বোধন করা হয়। 

উদ্বোধন করেন সেন্ট ডেনিসের মেয়র মাতিউ হ্যানোতা, স্থপতি ফেডেরিক ক্যাফ, অল ইউরোপীয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন আয়েবার মহাসচিব ও শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা কাজী এনায়েত উল্লাহ এবং সিকানো বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সরুফ সদিওল। 

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন আয়েবা প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ড. জয়নুল আবেদীন ও ডিবিসির সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম। 

বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য অনুষ্ঠানের শুরুতে মেয়র মাতিও ওতি ফোনে তাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি একটি লিখিত বাণী দেন যেটি ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করে পাঠ করা হয়। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মাতিউ হ্যানোতা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাঙালি একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এমন একটা স্মৃতিস্তম্ভ তার এলাকায় করতে পেরে তিনি গৌরবান্বিত বলেও জানান। 

মেয়রের অফিসের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হবে বলেও তিনি জানান। 

অল ইউরোপীয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন আয়েবার প্রেসিডেন্ট বলেন, এ উদ্যোগ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে।

আয়েবা সেক্রেটারি জেনারেল কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার উদ্বোধন এক ঐতিহাসিক ঘটনা যা ২১ ফেব্রুয়ারির ইতিহাস এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে ফ্রান্সের মানুষের কাছে এবং বাংলা ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেবে। 

ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারটি বাংলা ভাষাভাষীদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

প্যারিসের মাটিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা অনুযায়ী এ শহীদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতার জন্য তিনি আর্কিটেক্ট ও মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। 

তিনি বলেন, এই উদ্যোগ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাষা, কৃষ্টি সংস্কৃতি মেলে ধরবে, বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়।

সিকানো বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সরুফ সদিওল মেয়র মাতিও ওতি, ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশি, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্যারিস সিটিতে এমন একটি স্থাপত্য নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এক মিনিট নীরবতা পালন, বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শেষ হয়। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি, ডেপুটি মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ফ্রান্সের বিভিন্ন বাংলাদেশি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত আয়েবা নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী, বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বরলিপি শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক আমদাদুল হক স্বপন। 

প্যারিসে এটি প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার হলেও, ফ্রান্সে এটি দ্বিতীয় স্থায়ী শহীদ মিনার। ইতোপূর্বে ২০২১ সালে ফ্রান্সের তুলুজ শহরে প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Cyber Security Ordinance to be announced this week: law adviser

Nine sections have been scrapped from the Cyber Security Act 2023, he says

16m ago