তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন যাত্রীরা

‘বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্স কর্মকর্তারা আমাদের যেন ন্যূনতম সম্মান দেন’

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ অব্যবস্থাপনা এবং বিমানবন্দর-এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসদাচরণ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা।
স্টার ফাইল ছবি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ অব্যবস্থাপনা এবং বিমানবন্দর-এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসদাচরণ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা।

আজ বুধবার শাহজালাল বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এবং বিমানবন্দরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গণশুনানি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে যাত্রীরা তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। এই যাত্রীদের বেশিরভাগ প্রবাসী শ্রমিক।

আকাশপথে যাত্রীসেবা উন্নত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেবিচক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ সময় বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক এসএম ইসহাক তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, গত ২৭ বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন তিনি। এরমধ্যে অন্তত ২৫ বার ঢাকায় এসেছেন।

দেশের প্রতি ভালোবাসার অংশ হিসেবে সৌদি আরব থেকে ঢাকায় আসার জন্য তিনি সবসময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু সহায়তা চাইলে বিভিন্ন সময় বিমানবন্দর ও বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।

'বিদেশে কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে আমরা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। কিন্তু বিভিন্ন সময় বিমানবন্দর ও বিমানের কর্মকর্তারা আমাদের প্রতি ন্যূনতম সম্মান দেখান না', বলেন এসএম ইসহাক।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন `আমার অনুরোধ, বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা আমাদের যেন ন্যূনতম সম্মান দেখান।'

লাগেজ অব্যবস্থাপনার উদাহরণ তুলে ধরে এসএম ইসহাক বলেন, গত ৮ জুলাই তিনি তার ৩টি লাগেজের মধ্যে একটি কাটা দেখতে পান। এর ভেতরে থাকা অনেক জিনিস আর পাননি তিনি।

কুমিল্লার ওলিউল্লাহ অভিযোগ করেন, গত ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ঢাকা ফেরার সময় বিমানবন্দরে তিনি তার একটি লাগেজ পাননি।

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিমানবন্দর ব্যবহার করা আরও বেশ কয়েকজন যাত্রী বিমানবন্দরে লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ে অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়েছেন। লাগেজ পেতে প্রায়ই ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লেগে যায় বলে জানান তারা।

বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এ সময় মালয়েশিয়া থেকে আসা এক যাত্রীকে লাগেজ চেক করার সময় কাস্টম কর্মকর্তার চড় মারার প্রসঙ্গটিও তোলেন।  

মো. রাসেল ও মো. আনিস নামের ২ যাত্রী অভিযোগ করেন, তারা আজ দুপুর দেড়টায় ওমান যাওয়ার জন্য সালাম এয়ারের একটি এজেন্সি থেকে বিমানের টিকিট কিনেছিলেন।

কিন্তু বিমানবন্দরে যাওয়ার পর তারা জানতে পারেন, ওই সময় সালাম এয়ারের কোনো ফ্লাইট নেই।

এ সময় বেবিচক চেয়ারম্যান শাহজালাল বিমানবন্দর এবং সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের অবিলম্বে যাত্রীদের সমস্যা সমাধান করতে বলেন।

শাহজালালের কর্মকর্তা ও কর্মীদের অসদাচরণের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা বিমানবন্দরের সব স্টেকহোল্ডারদের জন্য একটি আচরণবিধি প্রস্তুত করছেন।

'কেউ যদি বিমানবন্দরে কাজ করতে চান, তবে তাকে এই আচরণবিধি অনুসরণ করতে হবে,' বলেন তিনি।

বেবিচক প্রধান আরও বলেন, বিমানবন্দরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন সব যাত্রীদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেন, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে।

লাগেজ অব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে তারা নিয়মিতভাবে বিষয়টি দেখাশোনার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছেন।

যাত্রীকে কাস্টমস কর্মকর্তার চড় মারার ঘটনায় বেবিচক প্রধান ক্ষমা চান এ সময়।

 

Comments