ব্যবসা টেকাতে সরকারের সহায়তা চেয়েছে এস আলম গ্রুপ

এস আলম গ্রুপ
ছবি: সংগৃহীত

ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ও পুনরুদ্ধারে সরকারের কাছে আর্থিক, সামাজিক ও আইনি সহায়তা চেয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ।

গত ১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও আর্থিক গোয়েন্দা শাখা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানকে পাঠানো এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়।

এস আলম গ্রুপের হিসাব ও অর্থ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠির অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপের অধীন বিভিন্ন কোম্পানির ব্যাংকে হিসাব রয়েছে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য তাদের পর্যাপ্ত অর্থ আছে।

ব্যবসায়ী গ্রুপটি অভিযোগ করেছে, গত ৮ আগস্ট থেকে ইসলামী ব্যাংক তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

পর্যায়ক্রমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ও ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসিসহ অন্যান্য ব্যাংক কোনো পূর্ব নোটিশ না দিয়েই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, 'এই ব্যাংকগুলোর সেবা স্থগিতের বিষয়ে চিঠি পাঠায়নি এবং আমরা বিশ্বাস করি, এটি তাদের পক্ষ থেকে একটি স্বেচ্ছাচারী ও বৈষম্যমূলক কাজ, পাশাপাশি গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের লঙ্ঘন।'

চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে বিএফআইইউর মৌখিক নির্দেশনা অনুযায়ী হিসাবগুলো জব্দ করা হয়েছে।

এ কারণে তাদের কোম্পানিগুলো এখন নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ও বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এ কারণে এস আলম গ্রুপের কোম্পানিগুলো সময়মতো বেতন ও মজুরি পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে, ফলে অনেক শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।

এছাড়া কোম্পানিগুলো ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে লাইন ও পরিষেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ব্যবসায়ী গ্রুপটি বলছে, গ্রুপটির কোম্পানিগুলো কর ও বিক্রয় আয় জমা দিতে, অর্থ প্রাপ্তি ও অর্থ স্থানান্তর বা ব্যাংক দায় ও বৈদেশিক ঋণপত্র (এলসি) বাবদ ব্যয় পরিশোধ করতে পারছে না।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশি-বিদেশি সরবরাহকারী ও গ্রাহকদের সঙ্গে চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা যথাসময়ে পরিশোধ করা যায়নি এবং বিলম্বিত অর্থ পরিশোধের জন্য সুদ নেওয়া হচ্ছে।

ব্যবসায়ী গ্রুপটি উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছে, খাদ্য ও সংশ্লিষ্ট পণ্যের শিল্প কাঁচামাল সংক্রান্ত ঋণপত্র বিভিন্ন ব্যাংক বাতিল করেছে। এতে অল্প সময়ের মধ্যে দেশে খাদ্য ও অন্যান্য উপকরণ সংকট দেখা দিতে পারে।

ব্যাংকের দায় পরিশোধ না করলে যে কোনো সময় ঋণ শ্রেণিকরণ হতে পারে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, অধিকাংশ কর্মী চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

বিএফআইইউর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন যে, তারা চিঠিটি পেয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি চিঠি পেয়েছে।

তিনি বলেন, 'বিএফআইইউ এস আলম গ্রুপের ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ বা স্থগিত করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়নি। তারা ব্যবসায়ী গ্রুপটির সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Is the US winning under Donald 'Tariff' Trump?

President Trump has now been president for almost 100 days.

3h ago