১ বছরে রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে, আশা সরকারের

অন্তর্বর্তী সরকার আশা করছে—রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও উন্নয়ন সহযোগীদের বাজেট সহায়তার কারণে ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে দেশের রিজার্ভ ৩৪ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার হবে।
আগামী ২ জুন পেশ করতে যাওয়া প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে—গত ২৪ মে পর্যন্ত মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে ছিল ২৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন রিজার্ভের হিসাব রাখতে দুটি পরিসংখ্যান মেনে চলছে।
এর একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রস্তাবিত পদ্ধতি বিপিএম সিক্স। এই পদ্ধতির আওতায় গত ২৪ মে পর্যন্ত নূন্যতম রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য—ডলারের স্থিতিশীল বিনিময় হার, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ও উচ্চ সুদহার রিজার্ভ আরও বাড়াতে সহায়তা করবে।
এ ছাড়াও আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংকসহ অংশীদারদের সমন্বয়ে আগামী জুনের মধ্যে সরকার বৈদেশিক অর্থায়ন হিসেবে প্রায় তিন দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এটি রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকার পূর্বাভাস দিয়েছে—আগামী জুন নাগাদ রিজার্ভ ৩১ দশমিক আট বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকায় জুনের শেষ নাগাদ মোট রিজার্ভ প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, 'ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি, আগামীতে তা আরও বাড়বে।'
তার মতে, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য রিজার্ভকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। তবে এতে সময় লাগবে।
সরকারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে রপ্তানি বাড়বে ১০ শতাংশ। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে নয় শতাংশ ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে—গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে নয় শতাংশ।
এ দিকে, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত পাঁচ শতাংশের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য আমদানি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আট শতাংশ ধরা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে আট শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ২০ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। এই বাড়তি রেমিট্যান্সের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বছরেও রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রেমিট্যান্স আরও বাড়লে ডলারের দাম স্থিতিশীল থাকবে।
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ১১ মে পর্যন্ত প্রবাসীরা ২৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তা ২৮ শতাংশ বেশি।
ডলারের সরকারি ও বেসরকারি বিনিময় হারের মধ্যে পার্থক্য কমে যাওয়া, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও প্রবাসীদের মধ্যে দেশপ্রেমের নতুন চেতনার সুফল হিসেবে রেমিট্যান্স বেড়েছে।
Comments