এবারও ঈদের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী: ক্যাব

সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, রসুন, কোরবানির ঈদ, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ক্যাব,
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের আগে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, রসুন, জিরাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ক্যাব।

সংগঠনটি বলছে, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এ নিয়ে কাজ শুরু করলেও বাজারে তেমন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। ফলে লাগামহীন পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভোক্তারা দিশেহারা ও অসহায়।

সংগঠনটি আরও বলেছে, সরকারকে এখনই তৎপর হতে হবে ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ক্যাব নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যের বাজারের অবস্থা তুলে ধরেছে ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সভায় খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন সরকার ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করেছেন ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির জন্য। কিন্তু, রিফাইনারি ও ডিলার পর্যায়ে বিক্রির দর ঠিক করা হয়নি। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীদের বেশি দামে ডিলারদের কাছ থেকে ভোজ্যতেল কিনতে হচ্ছে। তাই সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে তাদের ভোজ্যতেল বিক্রি করতে হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এতে ভোক্তারা বেশি দামে সয়াবিন তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এ কারণে কতিপয় ব্যবসায়ী ভোক্তাদের কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।

ঢাকার পাইকারি ও খুচরা বাজারের ক্যাবের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩ মাস আগে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৩৫-৪৫ টাকা। ৩ মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য সরকার ০৬ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ায় পেঁয়াজ এখন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ টাকায়।

ঢাকার শ্যামনগর পাইকারি বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৩-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্যাবের বাজারদর সংগ্রহের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে খোলা চিনি ১৩০-১৪০ টাকায় ও প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ সরকারের নির্ধারিত দামে বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে না। গত বছর খোলা চিনি প্রতি কেজিতে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ গত ১ বছরে খোলা চিনির মূল্য ৫৭ শতাংশের অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঢাকার খুচরা বাজারে বর্তমানে দেশি রসুন ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩ মাস আগেও যা খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ১০০-১৫০ টাকায়। গত এক বছরের তুলনায় দেশি রসুনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৩ শতাংশেরও অধিক।

বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি জিরা ৮০০-৮৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৩ মাস আগে যা ছিল ৫৮০-৬৫০ টাকা। আবার ১ বছর আগে একই সময়ে ছিল প্রতি কেজি গড়ে ৪৮০ টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে ৫৬ শতাংশের অধিক দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। 

এই পরিস্থিতিতে ক্যাবের সুপারিশগুলো হলো- নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি মূল্য, পাইকারি মূল্য ও খুচরা মূল্য নির্ধারণ করতে হবে ও তা বাস্তবায়নের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

কৃত্রিম সংকট তৈরি ও মজুতকারীদের জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে ও তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পেঁয়াজ, রসুন, আদার অধিকতর চাষাবাদের জন্য বীজ, সার ও লাগসই আধুনিক প্রযুক্তি কৃষকের কাছে সহজলভ্য করতে হবে।

পেঁয়াজ, রসুন, আদা, সয়াবিন তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক ছাড় দিয়ে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলার সুযোগ দিতে হবে এবং পণ্য আমদানির পর তা যেন নির্দিষ্ট দামে বাজারে বিক্রি হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

সড়কে চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন হয়রানি বন্ধ করার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমদানি করা পচনশীল পণ্য স্থল ও নৌ-বন্দর থেকে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
road accidents death in Bangladesh April

Road accidents killed 583 in April: Jatri Kalyan Samity

Bangladesh Jatri Kalyan Samity (BJKS), a passenger welfare platform, said that a total of 583 people were killed and 1,202 injured in 567 road accidents across the country in the month of April, citing media reports

4h ago