ভারত শুল্ক আরোপের পর ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি স্থগিত

মূলত চালের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা বাড়তি কর পরিশোধ এড়াতে এই চালান স্থগিত করেছেন।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া অ্যাঙ্কোরেজে অবস্থিত প্রধান চালবন্দরে একটি চাল সরবরাহ ট্রাক থেকে শ্রমিকরা চালের বস্তা খালাস করছেন। ছবি: রয়টার্স

ভারত সেদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন চালের চালান স্থগিত করেছেন রপ্তানিকারকরা। মূলত চালের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা বাড়তি কর পরিশোধ এড়াতে এই চালান স্থগিত করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ থেকে সময়মতো চাল রপ্তানি না হলে বেনিন, ঘানা, আইভরি কোস্ট ও লাইবেরিয়াতে চালের মজুত হ্রাস পেতে পারে। এসব দেশের বাজারে চালের দাম আরও বাড়তে পারে, কারণ ইতোমধ্যে এসব দেশের বাজারে চালের দাম বেড়েছে।

চলতি বছরের শেষের দিকে ভারতের রাজ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তার আগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত সরকার। ফলে, গত শুক্রবার দেশটি সেদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

ভারতের চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সত্যম বালাজির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিমাংশু আগরওয়াল বলেন, 'ক্রেতারা চালের চালান স্থগিত করছেন, কারণ কেউই শুল্ক দিতে রাজি নয়।'

রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (আরইএ) সভাপতি বি ভি কৃষ্ণ রাও জানিয়েছেন, প্রায় ৫ লাখ টন চালের চালান স্থগিত করা হয়েছে।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, তারা গত সপ্তাহে প্রতি মেট্রিক টন ৪৫০-৪৫৫ ডলারে সেদ্ধ চাল সরবরাহ করছিলেন, কিন্তু তারপর দাম রেকর্ড ৫২০ থেকে ৫৪০ ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি।

বি ভি কৃষ্ণ রাও বলেন, 'ভারত শুল্ক আরোপের আগেও দাম বাড়ায় ক্রেতারা অস্বস্তিতে ছিলেন। আফ্রিকান দেশের ক্রেতাদের বর্তমান মূল্যে চাল কেনার সামর্থ্য নেই।'

তিনি জানান, আগামী অক্টোবর থেকে গ্রীষ্মে বপন করা ফসল কাটা শুরু হলে চালের সরবরাহ বাড়বে। ফলে, স্থানীয় বাজারে ধানের দাম কমবে এবং চালের রপ্তানি মূল্যও কমবে।

ভারত ২০২২ সালে রেকর্ড ২২ দশমিক ২ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে ৭ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন সেদ্ধ চাল।

একটি গ্লোবাল ট্রেড হাউসের নয়াদিল্লিভিত্তিক ডিলার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও পাকিস্তান চালের দাম বাড়ানোয় আমদানিকারক দেশগুলোর হাতে তেমন কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, 'আফ্রিকান ক্রেতারা মনে করেন- চালান বিলম্বিত করা ও মূল্য সংশোধনের জন্য অপেক্ষা করাই সবচেয়ে ভালো।'

Comments