ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য ‘প্রায় স্থবির’, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা: রয়টার্স

আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্কের শঙ্কায় চলতি ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। সরকারি খরচে কৃচ্ছ্রতাসাধনের চেষ্টাও এর একটি কারণ। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই ক্রমশ এই ক্ষয় দেখা যাচ্ছে।
গত শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব বলা হয়।
বাজার বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা-বাণিজ্য গত ১৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির কারণে দেশটির ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা শঙ্কিত।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের ভাষ্য, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর চলতি ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য উৎপাদন ও সেবাখাতে সবচেয়ে বেশি মন্দা দেখা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি গত ১০ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই জড়িপ চালায়।
গত মাসে ক্ষমতা নিয়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। প্রতিবেশী মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ কর আগামী মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
চলতি মাসেই ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। তিনি সেমিকন্ডাক্টর ও ওষুধ আমদানির ওপরেও শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন।
এসবের পাশাপাশি, সরকারি খরচ কমাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে বনকর্মী পর্যন্ত অনেকেই ছাঁটাইয়ের তালিকায় আছেন। সরকারি খরচ কমাতে ধনকুবের ইলন মাস্ককে দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ ক্রিস উইলিয়ামসন বলেন, 'সরকারি নীতির প্রভাব নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্বিগ্ন। সরকারি খরচ কমানো থেকে শুরু করে শুল্ক আরোপ ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি—সবকিছু নিয়েই সবাই উদ্বিগ্ন।'
'শুল্ক আরোপের ফলে আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার কারণে পণ্যের বিক্রি কমেছে বলে জানা যাচ্ছে।'
কয়েকটি মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়লেও ওয়ালস্ট্রিট পুঁজিবাজারে লেনদেন কম।
অপর বাজার বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান বিলিংগার গ্রুপের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার বিশ্লেষক কিলে চ্যাপম্যান বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, 'সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, ট্রাম্পের বাণিজ্য সংক্রান্ত মধুচন্দ্রিমার দিন শেষ।'
গত বৃহস্পতিবার বিবিসি জানায়, আগের দিন বুধবার ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও বাণিজ্যনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার স্থিতিশীল রাখার প্রস্তুতি নিয়েছে বলেও বৈঠকে জানানো হয়।
Comments