রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেড়েছ। ফলে, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ রেকর্ড ছুঁয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, এ বছরের জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগের চেয়ে ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। তিন মাস আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ৫৭ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা।

এতে জুনে শেষ হওয়া প্রান্তিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের অনুপাত তাদের মোট ঋণের ২৫ দশমিক ০১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এই সময়ে বেসরকারি ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋনের পরিমাণ ও  বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়ে দেশে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ এই খাতের মোট ঋণের ১০ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ এবং এ বছরের মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক তার ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলেছে, চতুর্থ প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের সঙ্গে খেলাপি ঋণের অনুপাতও বেড়েছে।

একদিন আগে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিসহ আরো কিছু কারণে বাংলাদেশের আর্থিক খাতের দুর্বলতা আরও প্রকট হতে পারে এবং ব্যাংকিং খাতের তারল্যে চাপ বাড়তে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, খেলাপি ঋণ উদ্বেগের বিষয়, তাই এটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, খেলাপি ঋণের সমস্যা মোকাবিলায় দুর্বল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর ও অভ্যন্তরীণ মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে নীতিমালা শক্তিশালী করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশোধনমূলক ব্যবস্থার জন্য গাইডলাইন জারির প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। যেন দ্রুত হস্তক্ষেপ করতে ও দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য সংশোধনমূলক উদ্যোগ নিতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, মোট ঋণের সঙ্গে নিট খেলাপি ঋণের অনুপাত উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চ শেষে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। তবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিক শেষে তা বেড়ে হয়েছে ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি আগের প্রান্তিকের তুলনায় এই প্রান্তিকের প্রভিশনে যথেষ্ট ঘাটতির প্রতিফলন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, খেলাপি ঋণের বিপরীতে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন ঘাটতি ১০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, যেখানে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঘাটতি ১১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা।

তবে, ঢাকায় কর্মরত বিশেষায়িত ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংকগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত প্রভিশন ছিল বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, করোনা পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে।

তবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বাহ্যিক খাতের দুর্বলতার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা কার্যকরভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

6h ago