এখনো তারল্য সংকটে ৫ ইসলামি ব্যাংক

তারল্য সংকটে ৫ ইসলামি ব্যাংক
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সহায়তা সত্ত্বেও দেশের শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক এখনো নগদ অর্থ সংকটে ভুগছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ব্যাংকগুলো হলো—ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

প্রতিবেদন অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর শেষে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের তারল্য ঘাটতি ছিল ৬৫৮ কোটি টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের এক হাজার ৫৯ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৮২৬ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৪৮৩ কোটি টাকা ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৪৬৫ কোটি টাকা।

'আমাদের তারল্য পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে' উল্লেখ করে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের ব্যাংকে ব্যক্তিগত আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে করপোরেট আমানত এখনো বাড়েনি। তাই আমরা ঘাটতির মুখে পড়ছি।'

তবে গত এক সপ্তাহে তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য সহায়তার প্রয়োজন হয়নি বলেও জানান তিনি।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য ছিল দুই হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের উদ্বৃত্ত ছিল ১২৭ কোটি টাকা ও এক্সিম ব্যাংকের এক হাজার ১৭৮ কোটি টাকা।

এ ছাড়াও, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং শাখায় অতিরিক্ত তারল্য ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাঁচ ইসলামি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ন্যূনতম নগদ অর্থ রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের জরিমানা করেছে।'

তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক গত বছর থেকে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) ও সংবিধিবদ্ধ তারল্য অনুপাত (এসএলআর) ঘাটতিতে ভুগছে। অনেকে টাকা তুলে নেওয়ায় ব্যাংকগুলো এই সংকটে পড়েছে।'

নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন সিআরআর আকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আমানত রাখতে হয়। তাদের গ্রাহকদের আমানতের ন্যূনতম শতাংশ নগদ অর্থ, স্বর্ণ বা এসএলআর নামে পরিচিত অন্যান্য সম্পত্তি জমা রাখতে হয়।

ইসলামী ব্যাংকের জন্য ন্যূনতম সিআরআর প্রয়োজন নগদ অর্থের চার শতাংশ এবং এসএলআর প্রয়োজনীয়তা আমানতের পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক দিনের ঘাটতির নয় ও সাড়ে আট শতাংশ জরিমানা করে।

তবে ঘাটতির মধ্যেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই পাঁচ ব্যাংককে তারল্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।

দুই-তিন বছর আগেও ইসলামি ব্যাংকগুলোয় প্রচুর পরিমাণে অতিরিক্ত তারল্য ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'ব্যাপক ঋণ অনিয়মের কারণে পাঁচটি ব্যাংক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত সেপ্টেম্বরে ইসলামি ব্যাংকগুলোয় অতিরিক্ত তারল্য ছিল সাত হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ১৭ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা।

ইতিবাচক ধারায় গত সেপ্টেম্বরে ইসলামি ব্যাংকগুলোয় আমানতের প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৩১ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda leaves London for Dhaka in air ambulance

Fakhrul urges BNP supporters to keep roads free, ensure SSC students can reach exam centres

2h ago