যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২৪.৭৫ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি
স্টার ফাইল ফটো

চলতি বছরের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে ৬ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কারণ, আমদানি মন্দার কারণে দেশটির আমদানিকারকদের কাছে এখনো পুরনো পোশাকের মজুত থেকে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৮ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার।

এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র।

যদি টেক্সটাইল ও পোশাক রপ্তানি একসঙ্গে বিবেচনা করা হয় তাহলে আয় দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।

গত বছর বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রে ১০ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ওটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাক আমদানি ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে। টেক্সটাইল ও পোশাক উভয় পণ্য মিলিয়ে ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দেশটির পোশাকের খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে পুরনো পণ্যের মজুত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমছে

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পোশাক বিক্রেতা ও ব্রান্ডগুলো করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রচুর পোশাক পণ্য আমদানি করেছিল। কিন্তু, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি বাড়েনি।

যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হা-মিম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে আজাদ বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা রপ্তানি করা পোশাক বিক্রি করতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, একইসঙ্গে মার্কিন খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো গত বছর প্রচুর গার্মেন্টস পণ্য আমদানি করেছে।

ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) সম্প্রতি পূর্বাভাস দিয়েছে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরের ছুটির মৌসুমে ভোক্তাদের ব্যয় রেকর্ড স্তরে পৌঁছাবে এবং ২০২২ সালের চেয়ে ৩ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯৫৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ৯৬৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে থাকবে।

এনআরএফের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ম্যাথিউ শাই বলেন, 'ছুটির মৌসুমে বিক্রির প্রবৃদ্ধি মহামারির আগের পর্যায়ে ফিরে আসায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ এখন সামগ্রিকভাবে সবার আর্থিক অবস্থা ভালো অবস্থায় আছে এবং ভোক্তাদের ব্যয় করার এই সক্ষমতা অব্যাহত থাকবে।'

করোনা মহামারিতে অনলাইন শপিং ভোক্তাদের আচরণে বড় পরিবর্তন দেখেছে। এ বছর অনলাইন ও অন্যান্য নন-স্টোর বিক্রয় ৭ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৭৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা গত বছর ছিল ২৫৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।

এনআরএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ জ্যাক ক্লেইনহেঞ্জ বলেন, 'মূল্যস্ফীতি, গ্যাসের উচ্চমূল্য, কঠোর ক্রেডিট শর্ত এবং উচ্চ সুদের হার সত্ত্বেও ভোক্তারা চালকের আসনে আছেন ও স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।'

'আমরা আশা করছি, বছরের শেষের দিকে বিভিন্ন পণ্য কিনতে ব্যয়ের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে, তবে ধীর গতিতে,' ক্লেইনহেঞ্জ এক বিবৃতিতে বলেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago