আবারও অস্থিরতা, আশুলিয়ায় ৫০টির বেশি পোশাক কারখানা বন্ধ

বন্ধের নোটিশ। ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ/স্টার

টানা দুই সপ্তাহ সময় ধরে চলা শ্রমিক অসন্তোষ কাটিয়ে ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পোশাক কারখানাগুলো সচল হয়েছিল। কিন্তু আবারও বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে ৫২টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

শিল্প পুলিশের হিসাব অনুসারে, এসব কারখানার মধ্যে ৪৩টি বন্ধ করা হয়েছে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায়। বাকি নয়টিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, তাদের তালিকাভুক্ত কারখানাগুলোর মধ্যে মোট ২৭টি ১৩ (১) ধারা অনুসারে বন্ধ আছে। এছাড়া স্ববেতনে ছুটি, কাজ বন্ধ থাকা কিংবা শ্রমিকদের চলে যাওয়ার কারণে বন্ধ থাকা কারখানার সংখ্যা ১২টি।

শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বলা আছে, 'কোন প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বা বিভাগে বে-আইনী ধর্মঘটের কারণে মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন, এবং এরূপ বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকগণ কোন মজুরী পাইবেন না।'

একটি কারখানার সামনে শ্রমিকদের জটলা। ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ/স্টার

শিল্প পুলিশের ভাষ্য, আগের অসন্তোষ কাটিয়ে শিল্পাঞ্চলের পরিবেশর অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসার পর গত শনি ও রোববার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এর জের ধরেই আজ অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে আজ সোমবার সকালে দুই মাসের বকেয়া মজুরির দাবিতে নরসিংহপুর এলাকার জেনারেশন নেক্সট কারখানার শ্রমিকরা আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের নরসিংপুর এলাকা অবরোধ করেন। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

এদিন সকাল থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বন্ধ কারখানাগুলোর সামনে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

সেনাবাহিনীর অবস্থান। ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ/স্টার

জিরাবো এলাকার নাসা গ্রুপের কর্মী আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত পরশু তাদের কারখানার কিছু শ্রমিক নতুন করে কিছু দাবি তুলে অন্যদের কাজ করতে বাধা দেন। পরে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।

অন্যদিকে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে মাঠে নামা পোশাক শ্রমিক খাদিজা বেগম, 'এখন যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব না। তাই বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে।'

জেনারেশন নেক্সট কারখানার শ্রমিক মাহমুদা বেগম বলেন, 'কয়েকদিন আগে আমাদের কারখানা ১৩ (১) ধারায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। বকেয়া বেতন পরিশোধের পাশাপাশি বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে আজ আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম।'

আশুলিয়া শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় ৪৩টি এবং ৯টি কারখানায় সাধারণ ছুটির আওতায় বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Stop destroying nature, plant trees instead of cutting: Yunus

Protecting the environment should be a citizen-led movement, he says

42m ago