ধর্মঘটে জট হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়ছে অপেক্ষমাণ জাহাজের সারি

চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বন্দর। স্টার ফাইল ফটো

শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ায় সময়মতো জেটি ছাড়তে পারেনি অনেক জাহাজ। ফলে জেটি পেতে হিমশিম খাচ্ছে নতুন আসা জাহাজগুলো।

এতে বহির্নোঙরে লম্বা হচ্ছে অপেক্ষমাণ জাহাজের সারি।

সীতাকুণ্ড উপজেলায় চট্টগ্রাম ডিসি পার্কে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার পরিবহনে ব্যবহৃত প্রাইম মুভার অপারেটররা গেল সপ্তাহে তিন দিনের কর্মবিরতি করেন।

গত শুক্রবার রাত থেকে পণ্য পরিবহন শুরু হলেও বন্দর ইয়ার্ড ও বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে (আইসিডি) কনটেইনার জট আরও অন্তত দুই সপ্তাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

ওই তিন দিনের অচলাবস্থার কারণে কমপক্ষে ছয়টি জাহাজ নির্ধারিত সময়ে জেটি ছাড়তে পারেনি। এসব জাহাজ এক দিন থেকে চার দিন পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে।

এরমধ্যে চারটি জাহাজ প্রত্যাশিত ৯০০ টিইইউ রপ্তানি কনটেইনার ও এক হাজার টিইইউ খালি কনটেইনার না নিয়েই বন্দর ছেড়েছে।

ফেলে যাওয়া এসব কনটেইনার যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ওই জাহাজগুলো বন্দরের জেটিতে বাড়তি সময় থাকায় নতুন আসা জাহাজের জেটি পেতে দেরি হচ্ছে।

গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষায় ছিল ১৪ জাহাজ। এসব জাহাজ কমপক্ষে এক থেকে তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকরা যখন ধর্মঘট শুরু করেন তখন অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা ছিল তিনটি।

জেটি অপারেটররা মনে করছেন—নতুন আসা জাহাজগুলোর মধ্যে কয়েকটিকে আরও বেশি দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। কারণ বহির্গামী কয়েকটি জাহাজ কনটেইনার নিতে সেখানে থাকার মেয়াদ বাড়িয়েছে।

এ ছাড়াও, পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় বন্দর ইয়ার্ড ও আইসিডিতে আমদানি, রপ্তানি ও খালি কনটেইনার জমে গেছে।

বন্দরের ব্যস্ততম দুই টার্মিনাল—নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালে মোট ধারণক্ষমতার ৮০ শতাংশই এখন কনটেইনারে ভর্তি।

দুই টার্মিনাল পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধর্মঘটের কারণে বন্দর থেকে আইসিডিতে কনটেইনার পরিবহন না হওয়ায় ইয়ার্ডে কনটেইনার জমে গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'সাধারণত গড়ে প্রতিদিন আড়াই হাজার টিইইউয়ের বেশি আমদানি কনটেইনার খালাস ও আইসিডিতে পাঠানো হয়। ধর্মঘটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়াও, ওই তিন দিনে জাহাজ থেকে নেমেছে আরও তিন হাজার টিইইউ আমদানি কনটেইনার।'

তার মতে, নির্বিঘ্নে কাজ করতে বন্দরের ইয়ার্ডে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ জায়গা খালি রাখতে হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় জট কমাতে আরও দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

একইভাবে, আইসিডিগুলো কনটেইনার জট দূর করতে চেষ্টা করছে। ধর্মঘটের ফলে ১৯ আইসিডিতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ কনটেইনার জমেছিল।

এই ১৯ আইসিডিতে সাধারণত সাত থেকে আট হাজার টিইইউ রপ্তানি কনটেইনার থাকে। গত তিন দিনের ধর্মঘটের কারণে তা বেড়ে হয়েছিল ১৪ হাজার টিইইউ।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার ডেইলি স্টারকে জানান, ধর্মঘটের পর প্রচুর সংখ্যক কনটেইনার পরিবহন করা হলেও গতকাল বিকেল পর্যন্ত তাদের হাতে ১২ হাজার টিইইউ রয়ে গেছে।

'যেকোনো অচলাবস্থা পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতি পর্যায়ে জট তৈরি করে। ডিপোগুলোয় এই জট দূর করতে আরও ১৫ দিন লাগতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

4h ago