১১৪ কোটি টাকার গাড়ি নিলামে সাড়ে ১২ কোটিতে বিক্রি

নিলামে তোলা গাড়ি।

বিলাসবহুল গাড়িগুলোর মোট বাজারমূল্য ১১৪ কোটি টাকা। তবে, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাদের কাছে ওই ৭১টি বিলাসবহুল গাড়ি ১২ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় হস্তান্তরের অনুমোদন দিয়েছে।

শুল্ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ১১ বছরে অন্তত ৬ বার গাড়ি নিলামে পাঠানোর পরেও কম সাড়া পাওয়ায় তারা এত অল্প দামে গাড়িগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

গাড়িগুলো একদিকে যেমন চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গা দখল করে আছে, অপরদিকে সেগুলোর অবস্থাও দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর কাস্টমস হাউস বিএমডব্লিউ, ল্যান্ড রোভার, মিতসুবিশি, মার্সিডিজ ও লেক্সাস ব্র্যান্ডসহ প্রায় ৭৮টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে তোলে। পরে ই-নিলাম প্রক্রিয়ায় নথি জমা দিয়ে ৭১টি গাড়ি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন দরদাতারা।

নিলামে গাড়ির সর্বোচ্চ দর উঠেছে আড়াই লাখ থেকে সাড়ে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

গত বুধবার কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামে অংশ নেওয়া ৭৮ জন শীর্ষ দরদাতার নাম প্রকাশ করেছে। নিলামে ৫০০ জনেরও বেশি লোক অংশ নিয়েছিল।

এর আগে প্রায় ১১১টি গাড়ি ৫ বারের বেশি নিলামে উঠলেও এর মধ্যে মাত্র ৩৩টি বিক্রি করতে পেরেছিল কাস্টমস।

প্রায় এক দশক আগে জাতিসংঘের একটি কনভেনশনের অধীনে শুল্কমুক্তভাবে গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আনার কারণে বেশিরভাগ দরই প্রত্যাশিত মূল্যে পৌঁছায়নি।

'১৯৫৪ সালের ব্যক্তিগত সড়ক যানবাহনের অস্থায়ী আমদানি সংক্রান্ত জাতিসংঘের কাস্টমস কনভেনশন' কার্নেট ডি প্যাসেজ নামে পরিচিত এক ধরনের বিশেষ সুবিধা দেয়।

এ সুবিধার আওতায় পর্যটকরা শুল্ক প্রদান ছাড়াই একটি দেশে তাদের যানবাহন আনতে পারে, যদি পরে যানবাহনগুলো বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে ফেরত নেওয়া হয়।

সর্বোচ্চ দরদাতার তালিকা অনুযায়ী, একটি মিৎসুবিশি মিনি জিপের দর নিলামে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। যদিও গাড়িটির মূল দাম ছিল ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ নিলামের মূল্য মূল দরের ২ শতাংশ।

গাড়িটির শীর্ষ দরদাতা এসএস ট্রেডিং করপোরেশন। জাপানের তৈরি ১ হাজার ৮৩৪ সিসির গাড়িটি ২০০০ সালের।

২০০৬ মডেলের রেঞ্জ রোভারের জন্য সর্বোচ্চ দর ওঠে সাড়ে ৫০ লাখ টাকা। ঢাকা-ভিত্তিক ব্যবসায়িক কোম্পানি সুইটস লিমিটেড গাড়িটির এ দর তোলে। তবে, গাড়িটির মূল দর ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার সন্তোষ সরেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকায় গাড়ির অবস্থার অবনতি হয়েছে।। ফলে ই-নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যায়নি। নিলামের নিয়ম অনুসারে, এই গাড়িগুলো শীর্ষ দরদাতাদের কাছে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'

কাস্টমস হাউসের নিলাম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গাড়িগুলো যুক্তরাজ্য থেকে এসেছিল। তবে তাদের বেশিরভাগই জার্মানি ও জাপানে কমপক্ষে ১৬ থেকে ২৭ বছর আগে উৎপাদিত হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

11h ago