কর ছাড় পেতে পারে ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক

কর ছাড় পেতে পারে ব্রোকারেজ হাউস
অলঙ্করণ: আনোয়ার সোহেল/স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট করের ব্যবধান পাঁচ শতাংশ পয়েন্ট থেকে বাড়িয়ে সাড়ে সাত শতাংশ পয়েন্ট করা হতে পারে, যাতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহী হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল ২ জুন পেশ করতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ ঘোষণা আসতে পারে।

শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য সুখবর আসতে পারে।

পুঁজিবাজারে লেনদেন ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে লেনদেনের ওপর উৎস অগ্রিম কর বিদ্যমান শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ করা হতে পারে।

অন্যদিকে, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর করপোরেট কর হার বিদ্যমান সাড়ে ৩৭ দশমিক শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭ দশমিক শতাংশ করার প্রস্তাব আসতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে—প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কর হার সাড়ে ২২ শতাংশ রাখা হচ্ছে। তাদের পুরো আয় ব্যাংকের মাধ্যমে হলে সুদের হার হবে ২০ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে—পুঁজিবাজারে তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কর হবে সাড়ে ২৭ শতাংশ। আগামী ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে শর্তসাপেক্ষে তা কমানো হবে না।

চলতি অর্থবছরে এ হার সাড়ে ২৭ শতাংশ। তবে তা হতে পারে ২৫ শতাংশ। দুটি শর্তে—যদি প্রতিষ্ঠানগুলো পাঁচ লাখ টাকার বেশি আয় করে এবং তাদের সব খরচ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী ব্রোকারেজ হাউসগুলো দীর্ঘদিন ধরেই কর কমানোর তাগিদ দিয়ে আসছে।

তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০০৯ সালে তা শূন্য দশমিক শূন্য ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক শূন্য ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে।

২০১০ সালে তা আরও বেড়ে শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ ও ২০১১ সালে শূন্য দশমিক এক শতাংশ করা হয়। ব্রোকারেজ হাউসগুলোর বিপুল চাহিদার কারণে ২০১১ সালের অক্টোবরে তা শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ করা হয়।

পরে ব্রোকারেজ হাউসগুলো ক্রমাগত কর কমানোর অনুরোধ জানায়, যাতে এটি অন্যান্য দেশের মতো হয়। কিন্তু, তাদের সেই দাবি মানা হয়নি।

এ বছর তা শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে রাজস্ব বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।

ডিবিএ সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম মনে করেন, সরকার যদি এটি কমিয়ে দেয় তবে তা অনেক ব্রোকারেজ হাউসকে টিকে থাকতে সহায়তা করবে। কারণ সেগুলো লোকসানে আছে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রায় সব ব্রোকারেজ হাউস লোকসানে পড়ছে। তবে শেয়ার লেনদেনের ওপর চার্জ ধরা হয় বলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর দিতে হচ্ছে।

কর কমানোর ফলে মূলত অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকারেজ হাউসগুলো উপকৃত হবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাজেদা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রচলিত ধারার ব্যাংক থেকে মার্চেন্ট ব্যাংকের কার্যক্রম সম্পূর্ণ ভিন্ন। কিন্তু, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর মতো একইভাবে কর দিতে হয়।'

মার্চেন্ট ব্যাংগুলোর ওপর আরোপিত করপোরেট কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএমবিএ।

তার মতে, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য করপোরেট কর কমানো হলে তারা গবেষণা ও অ্যাডভোকেসিতে বেশি খরচ করতে পারবে। এটি বিপুল সংখ্যক ভালো প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে আনতে সহায়তা করবে।

বেশি বেশি ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে এলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

এক পুঁজিবাজার বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের এসব উদ্যোগ দেখে মনে হয় সরকার পুঁজিবাজারকে চাঙা করার চেষ্টা করছে।'

পুঁজিবাজারে ভালো প্রতিষ্ঠান আনার ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কর ব্যবধান বাড়ানো তখনই সফল হবে যখন অন্য ধরনের নীতি সহায়তা পাওয়া যাবে।

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, 'কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিতে চাইলে তাকে অবশ্যই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে এমন শর্ত দিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।'

তালিকাভুক্তির অন্যান্য শর্তও থাকতে পারে। এসব উদ্যোগ ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে আসার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB buys $313m more from 22 banks

Bangladesh Bank purchased another $313 million from 22 commercial banks in an auction yesterday, reacting to the sharp drop in the US dollar rate.

1h ago