আইএমএফের ঋণ: তৃতীয় কিস্তির জন্য পূরণ হয়নি কেবল একটি শর্ত

আইএমএফ

আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তির জন্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে যে শর্তগুলো বাংলাদেশকে পূরণ করতে হতো তার মধ্যে একটি ব্যতীত বাকি সবই পূরণ হয়েছে।

এর আগের মতোই ন্যূনতম নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এটি একটি বাধ্যতামূলক শর্ত। ২০২৩ সালের শেষে বাংলাদেশের রিজার্ভের জন্য কমপক্ষে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এর থেকে কম রয়েছে ৫৮ মিলিয়ন ডলার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে, এর আগের কিস্তির আগে যা পূরণ হয়নি।

নূন্যতম রিজার্ভ ও রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলেও গত বছরের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ৬৮১ মিলিয়ন ডলারের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ দেওয়ার অনুমোদন দেয় আইএমএফ বোর্ড।

তৃতীয় কিস্তির অর্থ পরিশোধের জন্য পর্যালোচনা মিশন আগামী মার্চে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। দলটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকারের কর্মক্ষমতা পর্যালোচনা করবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রিজার্ভের পার্থক্য কমে যেতে পারে।

গত বছরের জুনে দ্বিতীয় কিস্তির ক্ষেত্রে আইএমএফের স্টাফ মিশন যে ছাড় দিয়েছিল তার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, 'যেহেতু রিজার্ভের ব্যবধান কম, কাজেই তৃতীয় কিস্তি ছাড় পেতে এটা কোনো সমস্যা হবে না।'

সাধারণত কোনো ঋণপ্রার্থী দেশ কোনো লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে আইএমএফ বোর্ডের কাছ থেকে মওকুফ চাওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা জানান, বাকি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রার জন্য মওকুফ চাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ডিসেম্বরে এনবিআর ও নন-এনবিআর করসহ রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। সরকার ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে।

তৃতীয় কিস্তির ঋণের শর্তগুলোর মধ্যে একটি হলো গত বছরের ডিসেম্বরে দেশের বাজেট ঘাটতি যেন ৯০ হাজার ৫২০ কোটি টাকার বেশি না হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘাটতি ছিল মাত্র ১২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।

ওই কর্মকর্তা বলেন, 'ঘাটতি আইএমএফের সর্বোচ্চ সীমার মধ্যেই থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।'

বাংলাদেশ বাকি চারটি পরিমাণগত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে।

পরিমাণগত ও নির্দেশক লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াও আইএমএফের কিছু কাঠামোগত শর্ত রয়েছে।

তার মধ্যে একটি হলো পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য পর্যায়ক্রমে মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার মতে, মার্চের মধ্যে প্রথম মূল্য সমন্বয় করা হবে।

এরপর থেকে বাংলাদেশ প্রতি তিন মাস পরপর আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পেট্রোলিয়ামের দাম সমন্বয় করবে।

আরেকটি কাঠামোগত শর্ত হলো, সরকার গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ত্রৈমাসিক জিডিপি ডেটা প্রকাশ করবে।

জাতীয় নির্বাচনের কারণে তথ্য প্রকাশে পিছিয়ে পড়ার পর জানুয়ারির মধ্যে প্রথম ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফ মে মাসে তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাঠাতে পারে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

17h ago