৪ বছরে বিদেশি বিনিয়োগ ৫.৭ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে

বিদেশি বিনিয়োগ
অলঙ্করণ: স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে নিট সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য পাঁচ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে বলেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম৬ নির্দেশিকা অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯-২০ অর্থবছরের তথ্য সংশোধন করায় তা সামনে আসে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আইএমএফের পর্যবেক্ষণ থাকায় আমরা তথ্য সংশোধন করেছি। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক কমেছে।'

আগে রপ্তানি ও রিজার্ভের তথ্য বাড়িয়ে বলা হয়েছিল। আইএমএফের পর্যবেক্ষণের পর তা সংশোধন করা হয়।

গত চার অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল পাঁচ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক তা ১১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার দেখিয়েছিল।

আইএমএফের পদ্ধতি অনুসরণ করে পুনঃবিনিয়োগকৃত আয় থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান কেটে নেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে।

কারিগরি কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরের আগে তথ্য সংশোধন সম্ভব হয়নি বলে জানান হুসনে আরা শিখা।

তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য বিপিএম৬ নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রকাশ করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল এক দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের বছরের তুলনায় আট দশমিক ৭৫ শতাংশ কম।

ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সঠিক নীতিগত ব্যবস্থা নিতে সঠিক তথ্য জরুরি। রাজনৈতিক কারণে বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য হয়তো বাড়িয়ে বলা হয়েছে। এতে আমরা নিজেদের ক্ষতি করেছি।'

'বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে নতুন তথ্যের আলোকে আগের নীতিগত উদ্যোগগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে।'

অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক অর্থনৈতিক তথ্য এখন দরকার উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এখন বলতে পারি যে আমরা মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ভুল নীতি নিয়েছি।'

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অর্থনৈতিক তথ্য গণনার ক্ষেত্রে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি।'

'কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য ভুল সত্ত্বেও অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র দেখা যাচ্ছে। ভুল তথ্য ভুল নীতির দিকে পরিচালিত করে।'

বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং রপ্তানি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও কর্মসংস্থান হয়নি। তাই তথ্য নিয়ে সংশয় ছিল।

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে আগে বিদেশি বিনিয়োগ কম ছিল। এখন তা আরও কমেছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। সংশোধিত তথ্য প্রতিফলিত করে যে আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Tribute to July uprising: Drone show lights up Dhaka's sky

In 12 vivid motifs, the July uprising came alive, tracing the heroism of Abu Sayed and the stirring role of women in the movement

12h ago