সপ্তাহে ২ দিন নৌকায় ঘুমাই: ফেরদৌস ওয়াহিদ
৩ বছর ধরে গ্রামে বসবাস করছেন গানের মানুষ ফেরদৌস ওয়াহিদ। অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দেওয়া এই শিল্পী গত জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় তার বাইপাস সার্জারি করতে হয়েছিল। তবে এখন অনেকটাই ভালো আছেন।
'এমন একটা মা দে না' খ্যাত বরেণ্য এই শিল্পী আজ রোববার সকালে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, '৩ বছর হলো গ্রামে স্থায়ী হয়েছি। গ্রামই বেশি ভালো লাগে। শহর আমার ভালো লাগে না। গ্রামের মানুষের জীবন, প্রকৃতি, নদী, নদীর ঢেউ, পাখির ডাক, জোছনা, দিনের আলো, সন্ধ্যায় ঝিঁঝিঁর ডাক -সবই আমাকে আকর্ষণ করে এবং মুগ্ধ করে। সেজন্য শহরের চেয়ে গ্রামের জীবনে বেশি টানে।
দীর্ঘ একটা জীবন তো শহরেই কাটিয়েছি। শ্রীনগর থানার দক্ষিণ পাইকশা গ্রামটি আমার। এটা আমার বাপ-দাদার ভিটা। ৩০ বছর ধরে এখানে যাতায়াত। এখন গ্রামেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।
প্রতিদিন ভোরবেলা হাঁটতে বের হই। প্রকৃতির ছোঁয়ায় অন্যরকম ভালো লাগে। মনে হয় এটাই তো জীবন। এখানেই সব ভালোবাসা রয়ে গেছে। এখানে এসে সময়টাকে ভাগ করে নিয়েছি। বাড়ির কাছে ইছামতি নদী। পদ্মা নদীও বেশি দূরে নয়। নদী আমার অনেক আপন,অনেক প্রিয়। সপ্তাহে ২ দিন ইছামতি নদীতে নৌকায় ঘুমাই। নিয়ম করে এই কাজটি করি। সকালে চলে যাই এবং পুরো ২ দিন নৌকায় কাটিয়ে বাড়ি ফিরি।
২ দিন নৌকায় থাকা-খাওয়া ও ঘুমানোর যে কী আনন্দ তা বুঝিয়ে বলা সম্ভব না। এর আনন্দ কিংবা ভালোলাগাটা আমিই অনুভব করি। নৌকায় কাটানোর সময় মনে হয়, জীবনের সেরা সময় পার । সত্যি করে বলছি, গ্রামে এসে অনেক ভালো সময় পাাচ্ছি।
নানা রকম বই পড়ি। ইতিহাসের বই বেশি পড়ি, ধর্মীয় বইও পড়ি। রাত আমার আকাশ জানার, আকাশ দেখার সময়। মাঝে মাঝে নস্টালজিক হয়ে পড়ি। ছোটবেলার বন্ধুদের কথা মনে পড়ে। অনেক বন্ধু দূরে চলে গেছে। কিন্তু নতুন মানুষ এখানে আসা-যাওয়া করে। এটাও কম কী!
জীবন থেকে অনেক বছর কেটে গেল। ফিরোজ সাই, পিলু মমতাজ, ফকির আলমগীর,আজম খান ওরা ছিলেন আমার খুব ঘনিষ্ঠজন। ওরা নেই। ওদের কথাও মনে পড়ে গ্রামের জীবনে এসে।
৩ মাস ৩ দিন হয়ে গেল ডাক্তারের কাছ থেকে রিলিজ পেয়েছি। এখন সৃষ্টিকর্তার দয়ায় এবং মানুষের ভালোবাসায় শরীর একটু ভালো। ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছি । ডাক্তার বলেছেন চাইলে গান করতে পারব।
কিন্ত আমি এখনই গানে ফিরছি না। আরও ৩ মাস পর গানে ফিরব। ১২টি নতুন গান রেডি আছে। আরেকটু সময় নিয়ে ফিরতে চাই। এক জীবনে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এভাবেই ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে চাই।'
Comments