‘হীরামান্ডি’ নিয়ে নেপোটিজম বিতর্কে বানসালি

'হীরামান্ডি' সিরিজের পোস্টার ও পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি। ছবি: সংগৃহীত

বলিউড পেরিয়ে এবার ওয়েব সিরিজের জগতে পা রাখলেন সঞ্জয় লীলা বানসালি। মুক্তির পর থেকেই সিরিজটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এমনকি বানসালির বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগও তুলে তীব্র সমালোচনাও করেছেন কেউ কেউ।

গত ১ মে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় 'হীরামান্ডি: দ্য ডায়মন্ড বাজার'। এর আগে সঞ্জয় লীলা বানসালি নির্মিত 'বাজিরাও মাস্তানি', 'পদ্মাবত', 'গাঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি' দর্শক ও সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছিল। শুধু দেশে নয়, বিদেশের মাটিতেও আলোচিত হয়েছিল এ সিনেমাগুলো নিয়ে।

ওয়েব সিরিজের দুনিয়ায় হাতেখড়ির জন্যও পরিচালক বেছে নেন ইতিহাসভিত্তিক একটি বিষয়ই।

'হীরামান্ডি'তে ফুটে উঠেছে দেশভাগের হওয়ার আগের কিছু ঘটনা। মূলত ব্রিটিশ শাসিত ভারতের প্রেক্ষাপটে যৌনকর্মীদের পরিস্থিতি গল্পে প্রতিফলিত হয়েছে।

তারকাখচিত এ সিরিজে অভিনয় করেছেন মণীষা কৈরালা, সোনাক্ষী সিনহা, রিচা চাড্ডা, শরমিন সেহগাল, অদিতি রাও হায়দরি এবং সঞ্জিদা শেখসহ আরও অনেকে। এই সিরিজের হাত ধরে ফের বলিউডে কামব্যাক করেছেন অভিনেতা ফারদিন খান। 'হীরামন্ডি'-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি অধ্যয়ন সুমন এবং শেখর সুমনকেও দেখা যায় প্রধান চরিত্রে।

মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও নেপোটিজম বিতর্ক

বলিউড তারকাদের মধ্যে অনেকেই 'হিরামান্ডি' সিরিজ মুক্তির আগে বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে সিরিজটি দেখেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ প্রশংসাও করেছেন তারা।

তবে দর্শকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে সিরিজটি। বিশেষ করে শারমিন শেহগালের অভিনয় দেখে অনেকেই বানসালির বিরুদ্ধে নেপোটিজমের (স্বজনপ্রীতি) অভিযোগ এনেছেন। শারমিন শেহগাল সম্পর্কে সঞ্জয় লিলা বানসালির বোনের মেয়ে।

অনেকেরই দাবি, শুধু পরিচালকের ভাগনি হওয়ার সুবাদে আলমজেব চরিত্রে তাকে কাস্ট করেছেন। কটাক্ষের মুখে পড়ে নিজের একাধিক পোস্টের মন্তব্য সেকশন বন্ধ রেখেছেন অভিনেত্রী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেহগালের দুর্বল অভিনয় নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে। একজন লিখেছেন, 'এইমাত্র "হীরামান্ডি" দেখে উঠলাম। শারমিন শেহগাল খুব বেশি স্ক্রিন সময় পেয়েছিলেন অস্বাভাবিক অভিনয় দক্ষতার জন্য। কিন্তু কথা হলো, ও অভিনয় জানেই না! অভিব্যক্তির অভাব, বাচনভঙ্গিতে সমস্যা, পুরো অভিজ্ঞতাকে নষ্ট করে দিয়েছে।'

আরেকজন লেখেন, 'আমার সত্যিই ওকে আলম হিসেবে পছন্দ হয়নি।'

চলছে তুমুল সমালোচনা

এ সিরিজ নিয়ে পাকিস্তানেও ঢের আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। সিরিজটি দেখে কড়া সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানি লেখক হামদ নওয়াজ।

এক্সে (টুইটার) তিনি লেখেন, "হীরামান্ডি' দেখলাম। 'হীরামান্ডি' ছাড়া সবকিছুই আছে। বলতে চাচ্ছি, গল্পের মধ্যে আপনি ১৯৪০-এর লাহোর সেট করতে পারেন না। অথবা আপনি যদি এটা করেন, তবে আগ্রার ল্যান্ডস্কেপ, দিল্লির উর্দু, লখনৌর পোশাক, ১৮৪০-এর ভাইব সেট করতে পারেন না।'

সঞ্জয় লীলা বানসালিকে নিয়ে আরো কড়া সমালোচনা করেছেন 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস'খ্যাত ভারতের বিতর্কিত পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী।

পাকিস্তানি লেখক হামদ নওয়াজের সমালোচনাকে 'উৎকৃষ্ট' বলে মন্তব্য করেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। এরপর তিনি লেখেন, 'আমি সিরিজটি দেখিনি। কিন্তু লাহোরের 'হীরামান্ডি' কয়েকবার ভিজিট করেছি। যৌনপল্লীকে রোমান্টিকভাবে উপস্থাপন করার প্রবণতা বলিউডের রয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক। কারণ যৌনপল্লীগুলো কখনো প্রাচুর্যে ভরা, সৌন্দর্যমণ্ডিত জায়গা ছিল না। এগুলো মানুষের ওপরে অবিচার, ব্যথা এবং দুঃখ-কষ্টের স্মৃতিচিহ্ন। যারা এর সঙ্গে পরিচিত নন, তারা শ্যাম বেনেগালের 'মান্ডি' দেখতে পারেন।'

তবে এত আলোচনা সমালোচনার মাধ্যে এই সিরিজ একটি দুর্দান্ত সাফল্য ছুঁয়ে ফেলল। নেটফ্লিক্সের সবথেকে বেশিবার দেখা সিরিজের তকমা পেল "হীরামান্ডি"।

Comments

The Daily Star  | English

Govt relieves Kuet VC, Pro-VC of duties to resolve crisis

A search committee will soon be formed to appoint new candidates to the two posts

2h ago