ফারুক সিনেমার পর্দার মতো বাস্তবেও প্রতিবাদী ছিলেন: ববিতা

‘নায়ক ফারুকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় অনেক বছর আগে। শুনেছি ব্যক্তিজীবনে তিনি অনেক সাহসী ও রাগী ছিলেন। তবে, শিল্পীজীবনে তিনি ছিলেন মাটির মানুষ। ক্যামেরার সামনে সত্যিই মাটির মানুষ হয়ে যেতেন। কীভাবে সংলাপ দিতে হবে, কীভাবে দৃশ্যটি আরও সুন্দর হবে—বিষয়গুলো নিয়ে তিনি ভাবতেন।’
ফারুক-ববিতা জুটি
ফারুক-ববিতা জুটি সব শ্রেণির দর্শককে ছুঁয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা সিনেমার সোনালি দিনের অভিনেতা ফারুক। অনেক সাড়া জাগানো সিনেমার নায়ক তিনি। গ্রামীণ, সামাজিক ও রোমান্টিক সিনেমায় অভিনয় করে এদেশের কোটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন তিনি।

'নয়নমণি', 'লাঠিয়াল' ও 'গোলাপী এখন ট্রেনে' বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাস হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ। ফারুক ও ববিতা জুটি হয়ে এসব সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন।

আজ সোমবার প্রখ্যাত অভিনেত্রী ববিতা নায়ক ফারুককে নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, 'নায়ক ফারুকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় অনেক বছর আগে। শুনেছি ব্যক্তিজীবনে তিনি অনেক সাহসী ও রাগী ছিলেন। তবে, শিল্পীজীবনে তিনি ছিলেন মাটির মানুষ। ক্যামেরার সামনে সত্যিই মাটির মানুষ হয়ে যেতেন। কীভাবে সংলাপ দিতে হবে, কীভাবে দৃশ্যটি আরও সুন্দর হবে—বিষয়গুলো নিয়ে তিনি ভাবতেন।'

'এক সঙ্গে সিনেমা করতে গিয়ে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল' উল্লেখ করে ববিতা আরও বলেন, 'আমাদের ২ জনের সাড়া জাগানো সিনেমাগুলো দর্শকরা এখনো দেখেন। ফারুক ভাই অনেকদিন ধরে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শুনেছিলাম অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কয়েক মাস আগে তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কী থেকে কী যে হয়ে গেল! প্রিয় মানুষটি আর নেই।'

'ফারুক ভাই নেই—সংবাদটি শোনার পর সকালটা বিষণ্ণ হয়ে গেল। যা ভাবিনি তাই হলো। সবকিছু ছাড়িয়ে তিনি ছিলেন অনেক আপন মানুষ। প্রতিবাদী মানুষ। সিনেমার পর্দায় যেমন প্রতিবাদ করতে পারতেন, বাস্তবেও তাই করতেন। তিনি সিনেমার পর্দার মতো বাস্তবেও প্রতিবাদী ছিলেন।'

'ফারুক-ববিতা জুটি সব শ্রেণির দর্শককে ছুঁয়েছিল। "নয়ন মনি" ও "গোলাপী এখন ট্রেনে"র কথা বলে কখনোই শেষ করা যাবে না। সিনেমা ২টি সুপারহিট ছিল। মাসের পর মাস এই সিনেমা ২টি দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়েছে। কয়েক যুগ পরও আজও এই সিনেমা ২টি নিয়ে কথা হয়।'

'ফারুক ভাইকে "গোলাপি এখন ট্রেনে" সিনেমায় পেয়েছিলাম। একসঙ্গে আরও কয়েকটি সিনেমা করেছি। এদেশের মাটি ও মানুষের কাছে আমাদের সিনেমাগুলো পৌঁছেছিল। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকেও আমাকে নিয়ে সিনেমা বানিয়েছিলেন। আজ সব শুধুই স্মৃতি।'

'মানিকগঞ্জের দিকে "নয়নমণি" সিনেমার শুটিং করেছিলাম। আমাদের কত স্মৃতি! তার ভরাট কণ্ঠ আর শুনতে পাব না। সাহসী মানুষটিকে আর দেখতে পাব না। রূপালি পর্দার এই মানুষ ওপারে ভালো থাকুক—এটাই চাওয়া।'

Comments