ফারুক ভাই ছিলেন সাদা মনের মানুষ: ফেরদৌস

ফারুখ ও ফেরদৌস। ছবি: সংগৃহীত

সদ্য প্রয়াত মিয়া ভাই খ্যাত সোনালি দিনের নায়ক ফারুকের সঙ্গে চিত্রনায়ক ফেরদৌস প্রথম অভিনয় করেন ঘরের লক্ষ্মী সিনেমায়। সেই থেকে তাদের সম্পর্কের শুরু। জীবদ্দশায় দুজনের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক ছিল।

চিত্রনায়ক ফারুককে নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের কাছে স্মৃতিচারণ করেছেন ফেরদৌস ।

ফেরদৌস বলেন, ফারুক ভাই ছিলেন সাদা মনের মানুষ। তার ভেতরটা ছিল শিশুর মতো সরল। ঝুট-ঝামেলা পছন্দ করতেন না। মানুষকে ভালোবাসার প্রবল ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছিলেন। ধনী-গরিব সব মানুষকে সমানভাবে ভালোবাসতেন। মানুষকে মানুষ হিসেবে বিচার করতেন। অনেক বড় মন না থাকলে এটা সম্ভব না।

ছোটবেলা থেকেই ফারুক ভাইয়ের অভিনয়ের ভক্ত আমি। স্কুল জীবনে ও কলেজ জীবনে তার অভিনীত প্রচুর সিনেমা দেখেছি। 'সুজন সখী', 'গোলাপি এখন ট্রেনে', 'লাঠিয়াল', 'নয়নমনি'…কয়টা সিনেমার নাম বলব? এসব সিনেমা দেখতে দেখতে তার অভিনয় ভালো লেগে যায়। গ্রামীণ চরিত্রে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দী। গ্রামীণ চরিত্রে এত দুর্দান্ত অভিনয় করতেন, যা মানুষকে কাঁদিয়েছে। আমাকেও কাঁদিয়েছে বলে জানান ফেরদৌস।

'তার আরেকটি বড় গুণ ছিল, এ দেশের চলচ্চিত্রকে খুব ভালোবাসতেন। চলচ্চিত্রের অভিভাবক ছিলেন। আমরা অভিভাবক হারালাম। তার সমস্ত ভাবনাজুড়ে এবং কর্মে ছিল কীভাবে ঢাকাই সিনেমা ভালো করবে, কীভাবে ঢাকাই সিনেমার উন্নয়ন হবে। বড় হৃদয়ের মানুষ না হলে সিনেমা নিয়ে এতটা ভাবতেন না। তার এই গুণের কথা চিরদিন মনে থাকবে।'

ফারুখ অনেক সুন্দর করে কথা বলতেন উল্লেখ করে ফেরদৌস বলেন, 'রাজনীতি, সমাজ, দেশ, সিনেমা, মুক্তিযুদ্ব, জাতির জনকসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করতেন। ঘনিষ্ঠতা হওয়ার পর তার সঙ্গে দিনের পর দিন কথা বলেছি। তিনি কথা বলতেন আর আমি শুনতাম। যত শুনতাম ততই মুগ্ধ হতাম।'

ফেরদৌস বলেন, 'তাকে মূল্যায়ন করা কঠিন। কেন না, তিনি শিল্পী হিসেবে অনেক বড় মাপের ছিলেন। মানুষ হিসেবেও বড় মাপের ছিলেন। শিল্পী হিসেবে বলব, ফারুক ভাই ছিলেন গ্রামবাংলার নায়ক। দেশের গ্রাম থেকে গ্রামে ছিল তার জনপ্রিয়তা। এটা সম্ভব হয়েছিল গ্রামীণ পটভূমির সিনেমায় অভিনয় করার জন্য। সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তার অবদান বহুদিন থাকবে।'

'তার শেষ বিদায়টাও সুন্দর হয়েছে। অসংখ্য মানুষ তাকে ভালোবাসতেন তার প্রমাণ পাওয়া গেছে শেষ বিদায়েও। শহীদ মিনার থেকে শুরু করে এফডিসি, চ্যানেল আই, গুলশানের আজাদ মসজিদ এবং তার গ্রামের বাড়িতে যেরকম মানুষের ঢল নেমেছিল, সেটাই প্রমাণ করে চলে যাবার সময়ও তিনি কতটা ভালোবাসা নিয়ে গেছেন। বিশেষ করে আমি বলব, তার এলাকার কথা। সেখানকার সব শ্রেণির মানুষ তাকে ভালোবাসতেন জীবদ্দশায়।'

এক এক করে সিনিয়র ও গুণী শিল্পীরা বিদায় নিচ্ছেন। আমরা দিন দিন অভিভাবকহীন হয়ে পড়ছি। এটা সত্যিই কষ্টের বলেন, ফেরদৌস।

Comments

The Daily Star  | English

Tajia procession marks holy Ashura in Dhaka amid tight security

Crowds began gathering at the site from the early hours, with many attending alongside their families and children

25m ago