গ্যাস-বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে

প্রতীকী ছবি | সংগৃহীত

কৃচ্ছ্রসাধনে ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। ফলে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ডিজেলের দাম আবারও বাড়ছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্যাস কেনার প্রকৃত ব্যয় পরিশোধের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বলেন।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সর্বশেষ বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য সমন্বয় ঘোষণা অনুযায়ী, যদি ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করা হয়, তাহলে বিদ্যুতের দাম প্রতি কিলোওয়াটে ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৮ টাকা ৩০ পয়সা এবং গ্যাসের দাম ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি ঘনমিটারে ১১ টাকা ৬২ পয়সা হবে।

বিইআরসির তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুতের ভর্তুকি ১৭ হাজার কোটি টাকা ও গ্যাসের ভর্তুকি ৬ হাজার কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারকে যে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা অনেক বেশি বোঝা।'

সরকার প্রথমে বিদ্যুতের ভর্তুকি কমাবে।

শিল্প প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টরাই শুরুতে বিদ্যুতের জন্য উচ্চমূল্য পরিশোধ করবে উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।'

ভারত ও সিঙ্গাপুরের উদাহরণ তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী, যেখানে বেসরকারি উৎপাদকরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এবং তাদের মূল্যে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে।

ভর্তুকি তুলে দিলে ডিজেলের দামও লিটারে ৪ থেকে ৫ টাকা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, 'বিপিসি ভর্তুকি দেয় এবং পেট্রোল ও অকটেনে লাভ করে।'

ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে বিপিসি, যা ব্রেক-ইভেন ভিত্তিতে চলে।

তবে, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের মধ্যে বিপিসি ৪৮ হাজার ১১৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। কিন্তু, ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক বাজারে দামবৃদ্ধির কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাটির লোকসান শুরু হয়।

গত ৫ আগস্ট সরকার জ্বালানি তেলের দাম গড়ে রেকর্ড ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে বিশ্ববাজারের দরের কাছাকাছি নিয়ে যায়। সে সময় বিপিসি জানায়, ওই মুনাফা বিগত ৫ মাসের লোকসান মেটাতে ও একটা অংশ উন্নয়ন কাজেও ব্যয় করা হয়েছে।

বিপিসির এক কর্মকর্তা জানান, দাম সমন্বয়ের পরেও এখনো বিপিসির প্রতি লিটারে ৪ থেকে ৫ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।

নসরুল হামিদ বলেন, 'ভোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যই দিতে হবে। যদি আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বেশি হয়, তাহলে তাদের সেই মূল্যই দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কম হলে তারা কম অর্থ দেবেন।'

ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ১৫ দিনের চক্রাকার গড় আন্তর্জাতিক হার, বিনিময় হার, কর কাঠামো, অভ্যন্তরীণ মালবাহী ও অন্যান্য খরচের ওপর ভিত্তি করে 'দৈনিক মূল্য' পদ্ধতির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

22 out of 35 parties want caretaker govt system

As per proposals sent to constitution reform commission

9h ago